সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৯

স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য রক্ষায় সঠিক ভাবে ঘুমনোর উপায় গুলি কি কি ?.


 আমরা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা কাজ করি । বিছানায় শুলে চোখ বন্ধ হয়ে আসে । নতুন সূর্যের আকর্ষণে দেহ ও মনে নতুন শক্ত নিয়ে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে । ঘুম মানুষের জীবনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা । কিন্তু, অনেক মানুষ আছেন যারা রাতে ভালকরে ঘুমতে পারেন না । যদি আপনার রাতে সঠিক ঘুম না হয় তাহলে আপনার বিভিন্ন সমস্যা যেমন – হৃদপিণ্ডের, ফুসফুসের ক্ষতি, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মানসিক উৎকণ্ঠা বাড়া ইত্যাদি দেখা যায় । মেলাটোনিন কম তৈরি হওয়ার ফলে চোখের তলায় কালি পড়ে, গায়ের রং কালো হয়ে যায় ।


  বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কারণে ঘুম হয়না । মনে যদি চিন্তা থাকে, রাতে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত চা, কফি, সিগারেট খাওয়া, মদ্যপান করা ইত্যাদি । আবার অনেকে অসুস্থ থাকেন যেমন – যক্ষ্মা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, মাথার যন্ত্রণা ইত্যাদি । আবার অনেকের কোনও নিকট আত্মীয়ের মৃত্যু বা বিচ্ছেদ ঘটে থাকলে ।


  ঘুম বলতে কি বোঝায় ? বিজ্ঞানীদের মতে – আমাদের মস্তিষ্কে যদি রক্ত সরবরাহের ঘাটতি দেখা যায় তবে আমাদের ঘুম আসে । আধুনিক বিজ্ঞানীদের মতে – আমাদের মস্তিষ্কে ‘হাইপোথ্যালামাস’ অংশের পিছনে বিশেষ স্নায়ুকোষ থাকে । এই স্নায়ুকোষ গুলি থেকে এক প্রকার রাসায়নিক সংকেত পাঠায়, যার জন্য আমাদের ঘুম আসে ।

  সঠিক ভাবে ঘুমনোর উপায় কি কি

১) দুশ্চিন্তা দূর করুন – বেশিরভাগ মানুষের ঘুম না হওয়ার প্রধান কারণ দুশ্চিন্তা করা । বিছানায় শুলে পৃথিবীর যত চিন্তা মাথায় ভিড় করে । বিভিন্ন কথা চিন্তা করতে করতে অস্থির হয়ে পড়েন । তখন ঘুম আসতে দেরি হয় । তাই, আপনার বিছানায় শুয়ে যে কথা ভাবলে মনে ভালোলাগা তৈরি হয় শুধু সেই কথা ভাবুন । যা ভেবে আপনি কষ্ট পান সেই চিন্তা বাদ দিন । জীবনে কোনও দুঃখের কথা বেশিদিন মনে রাখবেন না । তাতে আপনি কষ্ট ছাড়া আর কিছু পাবেন না ।

২) মনের ইচ্ছা – অনেক মানুষের জীবনে বিভিন্ন ইচ্ছা থাকে, তা পূরণ করার চেষ্টা সে সবসময় করে । কিন্তু, যখন দেখা যায় যে তাঁর মনের ইচ্ছা পূরণ হয়না তখন উৎকণ্ঠা, উৎবেগে তাঁর ঘুম আসেনা । তাই, স্বপ্ন দেখা ভাল, কিন্তু, যা পূরণ হওয়ার নয় তা পূরণ করতে গিয়ে নিজের খাওয়া, ঘুম ছেঁড়ে নিজেকে কষ্ট দেবেন না । আপনি জীবনে ততটা পাবেন যতটা আপনার পাওয়ার যোগ্যতা আছে ।


৩) সঠিক খাবার – রাতে ঘুমনোর আগে খাবারের মধ্যে উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার খাবেন না, আপনার হজমে সমস্যা হবে । রাতে খাবার পর চা, কফি খাবেন না । এগুলি আপনার শরীরে ক্যাফিনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয় । এরফলে আমাদের ঘুম আসতে দেরি হয় । লঘু ও সহজপাচ্য খাবার খাবেন । রাতে ঘুমনোর আগে পারলে এক গ্লাস দুধ বা জল খাবেন ।

৪) নির্দিষ্ট সময় – আপনি কি বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন, সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন । তাহলে আজই এই অভ্যাস বদলে ফেলুন । বেশি রাত পর্যন্ত জেগে কাজ না করে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠে কাজ করা উচিত । কারণ – আমাদের পূর্বপুরুষ যখন বনে-জঙ্গলে থাকত তখন তাঁরা সূর্য ডোবার পর তাড়াতাড়ি ঘুমতে চলে যেতেন আর খুব সকালে উঠে পড়তেন । বর্তমানে আমরা আর ঠিক উল্টো কাজ করছি । আপনি প্রতিদিন একটি সময় নির্দিষ্ট করুন । সেই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমবেন । রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমবেন ও সকাল সকাল উঠে পরবেন । প্রতিদিন কম করে ৬-৮ ঘণ্টা আমাদের ঘুমের প্রয়োজন । অসুস্থ, বাচ্চা ও বৃদ্ধ ছাড়া দুপুর বেলা আমাদের ঘুমের তেমন প্রয়োজন হয় না । তবে কাজের ফাঁকে একটু অবসর নিলে আমাদের মস্তিষ্ক তরতাজা হয় ।  পড়াশুনা করার জন্য আমাদের উপযুক্ত সময় হল ঘুমনোর আগে ও ঘুম থেকে ওঠার পর । কারণ – এই সময় আমাদের মস্তিষ্ক বিশেষ প্রভাবশালী হয় ।

৫) শরীর পরিচর্যা – আপনি ঘুমের আগে আপনার শরীরের কিছু পরিচর্যা করতে পারেন । ঘুমের আগে মাথায় চিরুনি করলে মস্তিষ্কের ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় । এরফলে আমাদের সহজে ঘুম আসে । প্রতি সপ্তাহে একদিন ঘুমের আগে ত্বকের পুষ্টির জন্য আঙুর, স্টবেরি, দুধ, মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন । ঘুমের আগে অবশ্যই মুখের মেকআপ তুলে ফেলবেন ।


 শোয়ার আগে যদি আপনার শরীর ম্যাসেজ করতে পারেন তাহলে খুব ভাল হয় । হাত, পা ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে নেবেন । চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিতে পারেন । হালকা ও ঢিলেঢালা জামা কাপড় পরে ঘুমবেন । হালকা গরম জল দিয়ে ত্বক ও শরীর পরিষ্কার করে নিলে খুব ভাল হয় ।

৬) বিছানা – বিছানার সঙ্গে ঘুমের একটা সম্পর্ক আছে । শোয়ার আগে বিছানা গুছিয়ে নিয়ে ভালকরে দেখে নিন । প্রতিদিন অবশ্যই মশারি ব্যবহার করবেন । মশারির মধ্যে মশা, পিঁপড়ে, পোকামাকড় বা অন্য কোনও বস্তু আছে কিনা দেখে নেবেন । বিছানা সবসময় পরিষ্কার রাখবেন । বেশি নরম বা বেশি শক্ত বিছানা ও বালিশ ব্যবহার করবেন না । ঘুমের সময় আপনার শিরদাঁড়া সোজা রাখবেন । দুটো বালিশ ব্যবহার না করলে ভাল হয় ।

৭) ঘুমের পরিবেশ – ঘুমনোর আগে ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন । বিছানায় শোয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল, টিভি বা ইলেক্ট্রনিক বস্তু ব্যবহার বন্ধ করুন । ঘরটিতে যতটা সম্ভব অন্ধকার বা হালকা আলো থাকে । শোয়ার আগে জোরে জোরে কথা বলা বা গান শুনবেন না । আপনার যাতে সহজে ঘুম আসে ঘরটি যেন তেমন ঠাণ্ডা হয় । ডাক্তার ছাড়া অন্য কারোর ওষুধ খাবেন না ।


৮) শোয়ার ধরন – ঘুমনোর জন্য চিত হয়ে শোওয়া সব থেকে ভাল । তবে সারারাত একই ভাবে শুয়ে থাকবেন না । আপনার যে ভাবে শুলে আরাম হয় আপনি সেভাবে শুবেন । সারা শরীর ছড়িয়ে, এলিয়ে বা টান টান হয়ে শোবেন না । দুটি হাঁটুর তলায় একটি কোল বালিশ নিতে পারেন ।

  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । স্বাস্থ্য বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে কি রহস্য লুকিয়ে আছে ?.


  আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল যাকে আবার শয়তানের ট্রায়াঙ্গল বলা হয়, সেখানে কি রহস্য লুকিয়ে রয়েছে ? যেখানে জাহাজ বা উড়োজাহাজ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় । কাজ করা বন্ধ করে দেয় চুম্বক কারণ হিসাবে অনেকে মনে করেন স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, আবার অনেকে মনে করেন যে আর জন্য দায়ী  কোনও অতিপ্রাকৃতিক শক্তি বা ভিনগ্রহের প্রাণীর উপস্থিতি এর পিছনে কি কারণ রয়েছে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি । নেই কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা । বিভিন্ন লেখকের বিভিন্ন অতিরঞ্জিত লেখাতে জায়গাটিকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে ।

  বারমুডা দ্বীপদেশটি গঠিত ১৪৫ টি দ্বীপ নিয়ে । সব দ্বীপগুলি কোরাল দিয়ে তৈরি । মোট আয়তন ২১ বর্গমাইল । এই দ্বীপগুলির মধ্যে ১২০ টির নাম করণ করা হয়েছে । এর মধ্যে মাত্র ২০ টি দ্বীপে জনবসতি গড়ে উঠেছে । এদের মধ্যে সবার বড়ো দ্বীপটির নাম বারমুডা, যার রাজধানী হ্যামিলটন । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বাধিক উচ্চতা ২৬০ ফুট । স্পেনের এক সমুদ্র সন্ধানী ব্যক্তি যার নাম জুয়ান বারমুডেজ তিনি ১৫০৩ খ্রিস্টাব্দে এই দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কার করেছিলেন । তাঁর নাম অনুসারে এই দ্বীপপুঞ্জের নাম রাখা হয়েছে । বর্তমানে ব্রিটিশ উপনিবেশ হলেও বারমুডার স্বায়ত্ত শাসনের অধিকার আছে ।


 এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের অবস্থান আটলান্টিক মহাসাগরের ঠিক কোথায় তা নিয়ে অনেক মতভেদ আছে এক মতানুসারে - আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের উপর একটি ত্রিভুজাকৃতি অঞ্চল কল্পনা করা হয় । যাকে বলা হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গলফ্লোরিডা বন্দরের শেষ প্রান্তকে একটা বিন্দু ধরে সেই বিন্দুর সাথে বারমুডা আর পুয়ের্তো রিকো দ্বীপ দুটোকে যোগ করা হলে যে ত্রিভুজ তৈরি হয় তাকেই বলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলএর মধ্যে পড়ে পুয়ের্তো রিকো, বাহামাস আর বারমুডা । অন্য মতানুসারে – ফ্লোরিডা প্রণালী, বাহামাস ও সমগ্র ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সহ পূর্ব অ্যাটলান্টিক অঞ্চল পর্যন্ত এর অবস্থান ।

  ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর ১৪ জন বিমান শিক্ষানবিশ তাঁরা প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর ফ্লোরিডা থেকে রওনা দিয়েছিল । কিন্তু দেড় ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর পাইলট বুঝতে পারেন কোনও একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে । কিন্তু কি সেই সমস্যা তিনি বুঝতে পারলেন না । একসাথে তিনটি কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে । পশ্চিম দিকে যাওয়ার কথা হলেও পশ্চিম দিক কোনটা তিনি বুঝতে পারছেন না । স্রোত যেন এখানে থেমে গিয়েছে । বিমান যত এগোচ্ছে সামনে অল্প আলো দেখা যাচ্ছে । কিন্তু কি সেই আলো বোঝা যাচ্ছেনা । বিমান চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে । এই বিমানটি আর ফিরে আসেনি । তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি । সেইদিন এই বিমানটিকে খোঁজার জন্য আরও একটি বিমান পাঠানো হয় । ১৩ জন মানুষ সমেত সেই বিমানটি রওনা দেওয়ার ২৭ মিনিট পর হারিয়ে যায় । কোথায় হারিয়ে গেল পর পর দুটি বিমান, তার উত্তর এখন অজানা । বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে নিয়ে প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর The Associated Press পত্রিকায়

  এইরকম ঘটনা প্রথম নজরে আসে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের, তিনি যখন আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন । তিনি এক জায়গায় গিয়ে দেখলেন যে – এখানে কিছু আলো চকচক করছে । সমুদ্র একেবারে স্থির হয়ে আছে । কিন্তু সেগুলি কিসের আলো সেটা বোঝা যাচ্ছেনা । যেন মনে হয় রাস্তা এখানে শেষ হয়ে গিয়েছে । কম্পাস ও চুম্বক সব কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে । জাহাজ আর এগোবেনা


 
১৮৭২ সালে ‘মারি সেলেস্ত’ নামের একটি মালবাহী জাহাজ নিউইয়র্ক বন্দর থেকে রওনা হয়ে অনেকদিন কেটে যাওয়ার পর যখন সেটি গন্তব্যে পৌঁছায়নি, তখন তার খোঁজ শুরু করা হয় । সেই জাহাজটিকে
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের কাছে পাওয়া যায় সবকিছু অক্ষত ছিল কিন্তু, জাহাজের ১১ জন কর্মীকে পাওয়া যায়নি ।

  ১৯১৮ সালে এরকম ‘ইউএসএস সাইক্লোপস’ নামক একটি জাহাজ আমেরিকা যাচ্ছিল, সেই জাহাজ আর ফিরে আসেনি । ৩০৯ জন যাত্রীসহ কোথায় গেল তার হিসাব পাওয়া যায় না ১৯৩৬ সালে ‘মেরিন সালফার কুইন’ নামে একটি জাহাজ ১৫ হাজার টন গলিত সালফার ও ৩৯ জন নাবিক নিয়ে  নিখোঁজ হয়ে যায় ।

  ১৯৩৭ সালে একটি উড়োজাহাজ ফ্লোরিডার উপকূলের আকাশে উধাও হয়ে গিয়েছিল কিন্তু, তাঁর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়না কোনও স্থানীয় খবরের কাগজে এই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়না ১৯৪১ সালে ‘ইউএসএস প্রটিয়াস’ ও ‘ইউএসএস  নিরিয়াস’ নামের দুটি জাহাজ নিখোঁজ হয়ে যায়


  ১৯৫৮ সালে ফ্লোরিডাতে একটি ঘটনা ঘটে  হার্ভি কোনভার নামে এক ব্যবসায়ী তার ইয়াচ নিয়ে প্রচণ্ড ঝড়ের মুখে পড়ে ঝড়ের উল্টো দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাকে তাঁর ইয়াচকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি

   ১৯৬৭ সালের একটা ঘটনা, উইচক্র্যাফট নামে একটি জাহাজের ক্যাপ্টেন যখন জানালেন যে ইঞ্জিনের গোলমাল দেখা দিয়েছে, তখন সেই জাহাজটি নোঙর করা থেকে মাত্র ১ মাইল দূরে ছিল । কিন্তু, কোস্ট গার্ড যখন সেখানে পৌঁছল সেই জাহাজকে সেখানে পাওয়া গেলনা ।

  অ্যালাম অস্টিন তিনি জাহাজ নিয়ে গিয়েছিলেন এখানে কি আছে তা নিয়ে গবেষণা করার জন্য । তিনি দেখেন সেখানে একটি ছোট জাহাজ আছে । ছোট জাহাজের লোকেরা অস্টিনকে চিনতেন । কিন্তু, রহস্য সমাধান করার আগে সেই ছোটো জাহাজটি হারিয়ে যায় । অস্টিনরা সেই জাহাজের আর কোনও নাগাল পাননি


 
এই রহস্য সমাধানের জন্য বিজ্ঞানীরা অনেক চেষ্টা করেছেন ও এখনো চেষ্টা চালাচ্ছেন । প্রচুর গবেষণার পর ২০১৬ সালের ৪ মার্চ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক একটি আর্টিকেল প্রকাশ করে
, তাতে জানা যায় যে প্রায় ৩০০ টির মত জাহাজ আর ৭৫ টির মত বিমান নিখোঁজ হয়েছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যের কারন -

 বারমুডাতে এত রহস্যের কারন হিসাবে বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে । সমুদ্রের প্রচণ্ড ঝড়ের জন্য এমন ঘটনা হতে পারে । ক্যারিবিয়ান হ্যারিকেন প্রচণ্ড শক্তিশালী, বহু মালবাহী জাহাজ এই ঝড়ে ডুবে গেছে । এরফলে কত প্রাণহানি হয়েছে । এখানে এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে ।

 সমুদ্রের স্রোতের জন্য এরকম হতে পারে । মেক্সিকো উপসাগরে এই স্রোতের গতি সেকেন্ডে ২.৫ মিটার । ছোটো প্লেন বা নৌকার যদি গোলমাল দেখা যায় তবে এই স্রোত তাকে অনেক দূরে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ।


 
এখানে রয়েছে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক, যার ফলে এখানে কোনও কম্পাস ও চুম্বক কাজ করে না । এখানে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক কুয়াশা । এরফলে বিমান বা জাহাজের চালকরা দিক ভুল করেন । এভাবে তাঁরা রাস্তা হারিয়ে ফেলে । এখানে রয়েছে একটি গুপ্ত নদী, সেটি সধারন অবস্থায় শান্ত থাকে । যখন কোনও জাহাজ সেখান দিয়ে যায় তখন তাঁর ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ডে পড়ে সেগুলি হারিয়ে যায় ।

 সাগরের অগভীর অংশে প্রাকৃতিক গ্যাস থাকে, তার থেকে অনেক সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে । তারপর ধ্বংসাবশেষ ভেসে ওঠে সেগুলি অনেক দূরে ভেসে যায় । আবার জলদস্যুরা জাহাজ লুটকরে জাহাজ ডুবিয়ে দেয় । ড্রাগ পাচারকারীরা ছোটো ছোটো ইয়াচ চুরি করে ।

 অনেকে মনে করেন এখানে রয়েছে অ্যালিয়ান । তাঁরা এখানে স্পেস যানে করে এসেছিল । আবার অনেকের মতে এখান থেকে কোনও অন্য দুনিয়াতে বা অন্য কোনও গ্রহে পৌঁছনো যায় । যদিও এর কোনও বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই ।


আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯

পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার ভৌগোলিক উপনাম গুলি কি ?


১) ভারতের হাইটেক শহর বলা হয় বেঙ্গালুরু 
২) ভারতের প্রবেশদ্বার বলা হয় মুম্বাই 
৩) সূর্যোদয়ের দেশ বলা হয় জাপান 
৪) ভারতের রোম বলা হয় দিল্লি 
৫) শেষ সূর্যের দেশ বলা হয় হাওয়াই দ্বীপ ।
৬) প্রাচীরের দেশ বলা হয় চীনকে ।
৭) কেকের দেশ বলা হয় – স্কটল্যান্ড ।
৮) নীল নদের দান বলা হয় ইজিপ্ট 
৯) স্বর্ণ শহর বলা হয় জোহানেসবারগ ।
১০) সহস্র হ্রদের দেশ বলা হয় ফিনল্যান্ড ।
১১) নিশীথ সূর্যের দেশ বলা হয় নরওয়ে ।
১২) অন্ধকারের দেশ বলা হয় আফ্রিকা ।
১৩) পঞ্চ নদীর দেশ বলা হয় পাঞ্জাব ।
১৪) পবিত্র ভূমি বলা হয় প্যালেস্টাইন ।
১৫) বাতাসের শহর বলা হয় শিকাগো 
১৬) দাক্ষিণাত্যের কাশী বলা হয় মাদুরাই ।
১৭) ইউরোপের ককপিট বলা হয় বেলজিয়াম ।
১৮) সিটি অফ জয় বলা হয় কলকাতা ।
১৯) ভাটির দেশ বলা হয় বাংলাদেশ ।
২০) মন্দিরের শহর বলা হয় বেনারস ।
২১) ভূস্বর্গ বলা হয় কাশ্মীর ।
২২) সপ্ত প্যাগোডার শহর বলা হয় মহাবলীপুরম ।
২৩) লবঙ্গ দ্বীপ বলা হয় মাদাগাস্কার ।
২৪) সাত পাহাড়ের দেশ বলা হয় রোম ।
২৫) গোলাপি শহর বলা হয় জয়পুর ।
২৬) পিরামিডের দেশ বলা হয় ইজিপ্ট ।
২৭) পৃথিবীর কসাইখানা বলা হয় শিকাগো ।
২৮) ভূমিকম্পের দেশ বলা হয় জাপান ।
২৯) চলচিত্রের শহর বলা হয় হলিউড ।
৩০) পৃথিবীর চিনির পাত্র বলা হয় কিউবা ।
৩১) স্বর্ণরেণুর নদী বলা হয় ইয়াংসি কিয়াং 
৩২) ভারতের ম্যানচেস্টার বলা হয় আমেদাবাদ ।
৩৩) প্রাচ্যের প্যারিস বলা হয় সাংহাই ।
৩৪) নিষিদ্ধ নগরী বলা হয় লাসা ।
৩৫) মুক্তার দ্বীপ বলা হয় বাহারিন ।
৩৬) পশু পালনের দেশ বলা হয় তুর্কিস্তান 
৩৭) সোনালি আঁশের দেশ বলা হয় বাংলাদেশ ।
৩৮) সাদা হাতির দেশ বলা হয় থাইল্যান্ড ।
৩৯) ম্যাপল বৃক্ষের দেশ বলা হয় কানাডা ।
৪০) প্রাচ্যের গ্রেট ব্রিটেন বলা হয় জাপান ।
৪১) শৈল রানি বলা হয় দার্জিলিং ।
৪২) পৃথিবীর ছাদ বলা হয় পামির মালভূমি ।
৪৩) নদী মাতৃক দেশ বলা হয় বাংলাদেশ ।
৪৪) রামধনুর দেশ বলা হয় হাওয়াই দ্বীপ ।
৪৫) সমুদ্রের বধূ বলা হয় - গ্রেট ব্রিটেন ।
৪৬) সোনার প্যাগোডার বলা হয় মায়ানমার ।
৪৭) ইউরোপের ক্রীড়াভূমি বলা হয় সুইজারল্যান্ড ।
৪৮) প্রভাত শান্তির দেশ বলা হয় কোরিয়া ।
৪৯) ভূমধ্য সাগরের দুর্গ বলা হয় জিব্রাল্টার ।
৫০) লিলি ফুলের দেশ বলা হয় কানাডা ।
৫১) বাংলার অক্সফোর্ড বলা হয় নবদ্বীপ ।
৫২) ভারতের আপেল রাজ্য বলা হয় হিমাচল প্রদেশ ।
৫৩) দক্ষিণ ভারতের বাগান বলা হয় তাঞ্জোর ।
৫৪) সোনালি পশমের দেশ বলা হয় অস্ট্রেলিয়া ।
৫৫) ক্যাঙ্গারুর দেশ বলা হয় সোনালি ।
৫৬) মসজিদের শহর বলা হয় ঢাকা ।
৫৭) পোপের শহর বলা হয় রোম ।
৫৮) উত্তরের ভেনিস বলা হয় স্টকহোম ।
৫৯) বাজারের শহর বলা হয় কায়রো ।
৬০) সাধুদের দেশ বলা হয় কোরিয়া ।
৬১) প্রবাল দ্বীপ বলা হয় আন্দামান ।
৬২) পান্নার দ্বীপ বলা হয় আয়ারল্যান্ড ।
৬৩) তুল গাছের দেশ বলা হয় বেরার ।
৬৪) বাংলার দুঃখ বলা হয় দামোদর ।
৬৫) ইউরোপীয় মহাযুদ্ধের স্থান বলা হয় বেলজিয়াম ।
৬৬) প্রাসাদের শহর বলা হয় কলকাতা ।
৬৭) স্বাধীনতা, সাম্যের দেশ বলা হয় ফ্রান্স ।
৬৮) বাঁকা শহর বলা হয় শিকাগো ।
৬৯) অশনির দেশ বলা হয় ভুটান 
৭০) কান্নার প্রবেশদ্বার বলা হয় বার-অল-মান্দার ।
৭১) চির বসন্তের শহর বলা হয় দক্ষিণ আমেরিকার কিটো ।
৭২) পাচ্যের লিভারপুল বলা হয় সিঙ্গাপুর ।
৭৩) ভারতের ভেনিস বলা হয় কেরালা ।
৭৪) মরুভূমির দেশ বলা হয় আফ্রিকা ।
  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৯

শিক্ষককুলের রবি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের বাংলা জীবনী.


 দক্ষিণ ভারতকে মানব মনীষার অন্যতম কেন্দ্র ভূমি বলা হয় । ভারতের সংস্কৃতিতে দক্ষিণ ভারতের অবদান কোনোদিন অস্বীকার করা যাবেনা । দক্ষিণ ভারত থেকে একাধিক মহান ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে । বর্তমানে চেন্নাই শহরের কাছে তিরুতানি নামে একটি ছোটো গ্রামে ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর  রাধাকৃষ্ণন জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি ছিলেন দক্ষিণ ভারতের সুসন্তান, মহান দার্শনিক ও রাষ্ট্রনায়কতাঁর বাবার নাম সর্বপল্লী বীরেস্বামী ও মায়ের নাম সীতাম্মা । তাঁর বাবা স্থানীয় জমিদারের কাছে কাজ করতেন ।

  
  রাধাকৃষ্ণনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল ছিলনা । এক মধ্যবিত্ত গোঁড়া তেলেগু ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন । দরিদ্রতা থাকলেও পরিবারের মানুষ জন পড়াশোনা ভালবাসতেন । ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন বইয়ের পোকা । তাঁর বন্ধুরা যখন মাঠে খেলতেন, তিনি একা একা বই পড়তেন । রাধাকৃষ্ণনের মা তাঁর এই ছেলের দিকে বিশেষ নজর দিতেন । কারণ – রাধাকৃষ্ণন ছিলেন উদাসীন, জগতের কোনও বস্তু তাকে বিশেষ আকর্ষণ করেনা । বইয়ের জগত ছাড়া অন্য কোনও জগত তাঁকে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ করেনা । তিনি তাঁর ছেলের এই বই পড়ার নেশা দেখে অবাক হয়ে যেতেন ।


 রাধাকৃষ্ণন তিরুতানি শহরে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন । এরপর তিনি আসেন তিরুপতি শহরে । এখানে তিনি ১৮৯৬-১৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রিশ্চান মিশনারির ছাত্র ছিলেন । ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভেলোর কলেজে ভর্তি হন ও চার বছর সেখানে পড়াশোনা করেন । এরপর মাদ্রাজ শহরের ১৯০৪-১৯০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ছিলেন ক্রিশ্চান কলেজের কৃতি ছাত্র । ছোটো থেকে তিনি প্রশ্ন করতে ভালোবাসতেন, তাঁর প্রশ্ন শুনে শিক্ষকরাও অবাক হয়ে যেতেন । তাঁরা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যে এই মানুষটি একদিন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করবেন ।

  স্বভাবে তিনি ছিলেন লাজুক ও আত্মকেন্দ্রিক । লাইব্রেরীতে বসে থাকতে তিনি খুব ভালবাসতেন । প্রথমে তিনি বিভিন্ন রকমের বই পড়তেন । সবেমাত্র তিনি স্মাতক হয়েছেন, তাঁর এক আত্মীয় ভাই তাঁকে একদিন কিছু দর্শনের বই উপহার দিয়েছিলেন । সারারাত জেগে তিনি সেই বইগুলি পরলেন ও তন্ময় হয়ে গেলেন । তাঁর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল । তিনি স্থির করলেন যে – দর্শনশাস্ত্র ছাড়া তিনি অন্য কিছুতে মন দেবেন না । তখন থেকে তিনি দর্শনশাস্ত্রকে তাঁর জীবনের রূপরেখা নির্ধারণ করেন ।


  ১৯০৯ সালের এপ্রিল মাসে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক নিযুক্ত হন । ছাত্রছাত্রীরা এমন শিক্ষক পেয়ে খুশি হয়েছিল । এরকম দেখা গেছে যে -  অন্যান্য ক্লাসের ছাত্ররাও তাঁর ক্লাসে ভিড় করেছে, বসার জায়গা নেই, তবুও করিডরে দাড়িয়ে আছে তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য । সাত বছর তিনি এখানে অধ্যাপনা করেন । ১৯১৮ সালে তিনি মাইসোর বিশ্ব বিদ্যালয়য়ে যোগদান করেন১৯২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে কলকাতায় আসেন । এখানে তিনি পঞ্চম জর্জের নামাঙ্কিত ‘প্রোফেসর অব ফিলজফি’ নামে দর্শন বিভাগের পদে রাধাকৃষ্ণন যোগদান করেন ।   

  ১৯২৫ সালে তিনি ভারতীয় দর্শন ‘কংগ্রেস’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছিলেন । ১৯২৫ সালে জুন মাসে লন্ডনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলির দর্শন কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল । একই বছর সেপ্টেম্বরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক দর্শন কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল । এগুলিতে তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন । এরপর বিভিন্ন বিদেশ থেকে তাঁর ডাক আসে । বিদেশের মাটিতে তিনি একাধিক সারগর্ভ বক্তৃতা দিয়েছিলেন । বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্রে কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড, চিকাগো, হার্ভার্ড ইত্যাদি থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ।


  ১৯৩৩ সালে তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত হন । ১৯৩৬-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের Eastern Religion And Ethis এর সম্মানিত অধ্যাপকের পদ অলংকৃত করেন । ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে স্যার উপাধি দিয়ে ভূষিত করেন । ১৯৩৯ সালে ইংল্যান্ডের রয়্যাল অ্যাকাডেমির মাননীয় সদস্য হয়েছিলেন ।

  ১৯৪৬ সালে ইউনেস্কোর ভারতীয় প্রতিনিধি হিসাবে তাঁকে নির্বাচন করা হয় । ১৯৪৮ সালে রাধাকৃষ্ণন ইউনেস্কোর চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হন । তিনি একই বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কমিশনের সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন । তিনি এবার রাজনৈতিক জগতে প্রবেশ করলেন । ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি সোভিয়েত রাশিয়ার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হিসাবে ছিলেন । পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর একান্ত ইচ্ছাতে তিনি এই পদ গ্রহণ করেন । এবার আমরা তাঁকে পত্যক্ষ রাজনীতিতে দেখতে পাই । ১৯৫২ সালে তিনি ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন । ভারত সবেমাত্র স্বাধীন হয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সমস্যা আছে । তিনি তাঁর অসাধারণ বাস্তববোধ ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার দ্বারা তাঁর দায়িত্ব সুন্দর ভাবে পালন করেন । ১৯৫২-১৯৬২ সাল পর্যন্ত তিনি উপরাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন । এই সময়ে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদও অলংকৃত করেন । ১৯৬২ সালে তিনি ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হন ।


  ১৯৬৪ সালে পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যু হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে পারতেন, কিন্তু তিনি ক্ষমতালোভী ছিলেন না । রাষ্ট্রপতি হিসাবে থাকতে চেয়েছেন । রাষ্ট্রপতি হিসাবে তিনি কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছিলেন । বেতন হিসাবে তিনি যে ১০ হাজার টাকা পেতেন, তাঁর মধ্যে ২ হাজার টাকা নিজের খরচের জন্য রেখে বাকী টাকা দেশ গড়ার তহবিলে দান করেন । তিনি সারা জীবন সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করেন । ১৯৬৭ সালের ৯ মে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন ।

  তিনি লেখক হিসাবেও সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন । তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থ যেমন – ভারতীয় দর্শন, পূর্ব-পশ্চিম, সমকালীন দর্শনে ধর্মের স্থান ইত্যাদি । তাঁর জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করা হয় । ভারতরত্ন পুরষ্কার তিনি লাভ করেছিলেন । ১৯৭৫ সালে তিনি ১৬ এপ্রিল রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।

   আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জীবনী বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জীবনী লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।