শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ম্যাপ বা মানচিত্রের সাহায্যে পৃথিবী চিনবেন কিভাবে ?.


   রাহুল কয়েকদিন আগে একটি অচেনা জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিল । বিকেলে আকাশ মেঘলা করে বৃষ্টি শুরু হল । এর মধ্যে সে রাস্তা হারিয়ে ফেলল । আকাশে মেঘ থাকার জন্য দিক ঠিক করতে পারছেনা । একজনকে বলায় সে বলল সোজা উত্তর দিকে চলে যেতে । কিন্তু, উত্তর দিক কোনটা বুঝতে পারছেনা । তাহলে আমাদের কাছে কি থাকলে কোন দিক বা জায়গা সম্বন্ধে ধারণা করতে পারি ? উত্তর হল ওই এলাকার ম্যাপ বা মানচিত্র ।


 খ্রিস্ট জন্মের ২৫০০ বছর আগে পৃথিবীর প্রাচীনতম মানচিত্র আবিষ্কৃত হয় ব্যাবিলনে । মানচিত্রটি একটি পোড়া মাটির ফলকের উপর আঁকা ছিল । ষোড়শ শতাব্দীতে ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভূগোল বিদ মার্কেটর প্রথম মানচিত্র বই প্রকাশ করেন । গ্রিক পুরাণের দেবতা ‘Atlas’ এর নাম অনুসারে নাম করণ করা হয় Atlas’বর্তমানে মানচিত্র বইকেও Atlas’ বলা হয় । মানচিত্র প্রাচীনকালে চামড়া, কাপড়, তুলোট কাগজের ওপর সাধারণত আঁকা হত । ম্যাপ শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ ‘ম্যাপা’ থেকে, যার অর্থ কাপড় । মানচিত্র আঁকার বিদ্যাকে বলা হয় কার্টোগ্রাফি । বর্তমানে ঘরে বসেই উপগ্রহের চিত্রের মাধ্যমে কম্পিউটার দ্বারা মানচিত্র তৈরি করা যায় ।

  মানচিত্র ছাড়াও আরও কতগুলির উপাদানের দ্বারা কোন অঞ্চলের বা জায়গা সম্বন্ধে জানতে পারি । গ্লোব হল পৃথিবীর একটি ছোটো মডেল বা ক্ষুদ্র প্রতিরূপ । তবে, গ্লোবের দ্বারা বেশি তথ্য পাওয়া যায়না । তাছাড়াও স্কেচ ও প্ল্যান-এর দ্বারা কোনও অঞ্চল সম্বন্ধে ধারণা করা যায় । স্কেচ থেকে দিক ও দূরত্ব সঠিক পাওয়া যায়না । পৃথিবী সম্বন্ধে সঠিক ভাবে  জানতে সবথেকে ভাল ও সহজ উপায় হল ম্যাপ বা মানচিত্র । পৃথিবী গোলাকার তাই তাঁকে সমতল কাগজে আঁকতে গেলে অনেক ত্রুটি হয় ।

  মানচিত্রে বিভিন্ন তথ্য ও নানা বিষয় দেখানো হয় । যে মানচিত্রে নদনদী, মালভূমি, পাহাড়-পর্বত, সমভূমি ইত্যাদি দেখানো হয় সেই মানচিত্রকে প্রাকৃতিক মানচিত্র বলে । যে মানচিত্রে জেলা, দেশ, মহাদেশ ইত্যাদি দেখানো হয় তাকে রাজনৈতিক মানচিত্র বলে । আবার যেসব মানচিত্রে আবহাওয়া, রেলপথ, সড়কপথ, জনসংখ্যা, খনিজ সম্পদ ইত্যাদি নির্দিষ্ট বিষয় দেখানে হয় তাকে বিষয়ভিত্তিক মানচিত্র বলা হয় ।


  মানচিত্র আঁকার জন্য আমাদের কতগুলি অপরিহার্য উপাদানের দরকার হয় । পুরো পৃথিবীকে আমরা একসাথে দেখতে পাইনা । একটি নির্দিষ্ট স্কেল অনুসারে পৃথিবী বা তার কোন অংশকে মানচিত্রে উপস্থাপন করা হয় । যখন ছোটো স্থানে পুরো পৃথিবী, দেশ বা মহাদেশ দেখানো হয় তখন তাকে ছোটো স্কেল মানচিত্র বলে । এখানে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়না । আবার যেসব মানচিত্রে ছোটো এলাকাকে বড়ো করে দেখানো হয় তাকে বড়ো স্কেল মানচিত্র বলে । এখানে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় ।

  মানচিত্রের কোনও বড়ো এলাকাকে পুরোটা দেখানোর জন্য তাকে বাস্তব দূরত্বের তুলনায় আকারে ছোটো করে দূরত্ব দেখানো হয় । পৃথিবীর দুটি স্থানের মধ্যে যে নির্দিষ্ট দূরত্ব অনুপাতে মানচিত্রের দূরত্ব দেখা যায় তাকে বলা হয় মানচিত্রের স্কেল । মানচিত্রে দুটি স্থানের মধ্যে বাস্তব দূরত্ব বের করার জন্য প্রথমে স্থান দুটিকে একটি সরল রেখায় যোগ করতে হবে । এরপর মানচিত্র দূরত্বকে মানচিত্রের স্কেল দিয়ে গুন গুন করতে হবে । পৃথিবীর ম্যাপের মধ্যে আমরা ভারত বা বাংলাদেশেকে খুব ছোটো দেখি । কিন্তু, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে দেখলে একটু বড়ো দেখা যায় ।  এর কারণ হল – পৃথিবীর মানচিত্রে অনেক দেশ, মহাদেশ থাকার জন্য ছোটো দেখায়, আর এশিয়াতে কয়েকটি দেশ থাকার জন্য বড়ো দেখায় ।

  মানচিত্রে যখন কোন এলাকাকে ছোটো করে দেখানো হয় তখন সেখানে কি কি আছে তা বোঝাবার জন্য কিছু সংকেত, রঙ, প্রতীক, চিহ্ন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় । পৃথিবীর সমস্ত দেশের মানচিত্রে কিছু নির্দিষ্ট সংকেত, রঙ, প্রতীক, চিহ্ন একই অর্থের জন্য ব্যবহার করা হয় । তাকে প্রচলিত বা প্রথাগত প্রতীক চিহ্ন বলে । এরকম কয়েকটি হল – পাহাড় পর্বতের জন্য খয়েরি বা বাদামি, জলের জন্য নীল, সমভূমি বা বনভূমির জন্য সবুজ, কৃষিজমির জন্য হলুদ রঙ ।

  এছাড়া শিরোনাম থাকে, যার সাহায্যে মানচিত্রের বিষয় বস্তুর ধারণা পাওয়া যায় । উত্তর দিক দেখানো তিরচিহ্ন, দিক নির্ণয় করার জন্য । যদি কোন মানচিত্রে দিক চিহ্ন না থাকে তবে তার উপরের দিক উত্তর দিক, নীচের দিক দক্ষিণ দিক, ডানদিকে পূর্বদিক ও বামদিকে পশ্চিম দিক হয় । মানচিত্রে অসংখ্য ধরণের তথ্য দেওয়া থাকে । নির্দেশিকায় তার অর্থ দেওয়া থাকে । তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে – মানচিত্রকে সঠিক ভাবে যদি না পড়তে পারেন তাহলে মানচিত্রে দেখানো কোন অঞ্চল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করতে পারবেন না ।

    আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । ভূগোল ও জানা অজানা  বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে ভূগোল ও জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । 


অর্ডার করতে নীচের লিঙ্কে প্লিজ ক্লিক করুন।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বিশ্ব উষ্ণায়ন কি, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীতে কি হতে পারে ?.


  আমাদের পরিবেশে বিভিন্ন উৎস থেকে বেরোনো ধোঁয়ার মধ্যে নানা রকমের গ্যাসীয় পদার্থ, ভাসমান কণা যেমন – মিথেন, কার্বনডাই অক্সাইড, সালফারডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি থাকে । পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এইসব গ্যাসীয় পদার্থ ছাড়া ওজোন ও জলীয় বাষ্প থাকে । এই পদার্থগুলো বায়ুমণ্ডলে গিয়ে জোমা হয়ে পৃথিবীকে একটা চাদরের মতো করে মুড়ে রেখেছে । এই গ্যাসীয় পদার্থের চাদর পৃথিবীর ছেড়ে দেওয়া তাপ শক্তির একটা অংশকে বায়ুমণ্ডলে ধরে রাখতে সাহায্য করে, পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করে ।

  বায়ুমণ্ডলে যদি জলীয় বাষ্প, কার্বনডাই অক্সাইড না থাকে তাহলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা -১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যেত । পৃথিবীতে প্রাণ থাকত না । আমাদের বিভিন্ন কাজকর্মের ফলে এই গ্যাসীয় পদার্থগুলির পরিমাণ পরিবেশে অনেক বেড়ে যায় । তখন এই গ্যাসগুলি দরকারের অতিরিক্ত তাপ পৃথিবীতে ধরে রাখে । এই কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থার থেকে বেড়ে যায় । তাই একে বলা হয় ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন’
  জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে বিশ্ব উষ্ণায়নের যোগাযোগ রয়েছে । বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে । বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জেনেছেন যে – এই গ্যাসগুলি পৃথিবীতে স্বাভাবিক অবস্থার থেকে অনেক বেড়ে গেছে । ২০০৬ সালে বায়ুমণ্ডলে কার্বনডাই অক্সাইড এত বেশি বেড়েছে যে কয়েক হাজার বছরে এতটা বাড়েনি । ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে এই গ্যাস প্রায় ৪০% পরিবেশে প্রতিবছর মিশেছে । ২০০১ সালের প্রথম দিকে জানা যায় যে – গত ১০০ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে । ১৯৮০ – ১৯৮৮ সালের মধ্যে ভারতে ১৮ টি তাপ প্রবাহের ঘটনা ঘটেএই তাপ প্রবাহের ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয় । মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা(NASA) জানায় যে – ২০০৫ সাল ছিল গত শতাব্দীর মধ্যে উষ্ণতম বছর ।

   হিমবাহকে জমাট বাঁধা বরফের নদী বলা হয় । হিমবাহ হল পৃথিবীর মিষ্টি জলের ভাণ্ডার । বিভিন্ন নদী এই হিমবাহের জলে পুষ্ট হয় । পৃথিবীর ৯৯% হিমবাহের অবস্থান উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে, হিমালয় পর্বতে, অন্যান্য পর্বতে । হিমালয়ের অন্যতম হিমবাহগুলি হল – গঙ্গোত্রী, জেমু, জমুনেত্রী ইত্যাদি । গঙ্গা, যমুনা ইত্যাদি নদী এইসব হিমবাহের বরফ গলা জলে পুষ্ট । বৃষ্টিপাত, বায়ুর উষ্ণতা প্রভৃতি আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর হিমবাহ গুলির উপর গভীর প্রভাব পড়ে । পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বেড়ে গেলে হিমবাহের বরফ বেশি মাত্রায় গলতে শুরু করবে ।

  উত্তর মেরু সংলগ্ন আলাস্কা উপকূলে যে বরফের স্তর আছে তা গত ৩০ বছরে প্রায় ৪০% কমে পাতলা হয়ে গিয়েছে । গঙ্গোত্রী হিমবাহ প্রতি বছর একটু একটু করে কমে আসছে । যদি হিমবাহগুলি সম্পূর্ণ গলে যায় তবে ভবিষ্যতে এই হিমবাহের জলে পুষ্ট নদীগুলির জল প্রথমে বেড়ে যাবে, পরে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাবে । এরফলে প্রথমে বন্যা, পরে জলের তীব্র সংকট দেখা যাবে । হিমবাহ প্রায় ২০% সূর্য রশ্মি শোষণ করে আর ৪০% সূর্য রশ্মি পতিফলিত করে । হিমবাহ যদি গলে যায় তবে এই ৪০% সূর্য রশ্মি ভূভাগ দ্বারা শোষিত হয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা আরও অনেক বাড়িয়ে দেবে ।

  হিমবাহ গলে গেলে সমুদ্রের জলের স্তর বেড়ে যাবে । ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে ৩ মিমি(০.১ইঞ্চি) করে সমুদ্রের জলতল প্রতিবছর গড়ে বেড়েছে । পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় হিমবাহ গলে যাওয়ার প্রভাব পড়বে সমুদ্রের জলের তলের উপর । একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে যে – ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা ৭০ সেমি বেড়ে যেতে পারে । ফলে সমুদ্র উপকূল এলাকাতে বন্যার সম্ভাবনা দেখা যাবে । এরফলে পৃথিবীর সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে বসবাসকারী অসংখ্য মানুষের ক্ষতি হতে পারে । উপকূল অঞ্চলের জীব  বৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়বে । আমাদের সুন্দরবন আজ এই বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে । এখানে বসবাসকারী প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ ও বাঘের সকলের অস্তিত্ব সংকটের মুখে ।

  প্রবাল বা কোরাল হল এক ধরণের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী । এরা নিডারিয়া পর্বের অন্তর্ভুক্ত । প্রবালরা তাদের দেহের বাইরে ক্যালসিয়াম কার্বনেট-এর একটা বহিঃ কঙ্কাল তৈরি করে । এটি এদের দেহকে রক্ষা করে । একসাথে বাসকরা অনেক প্রবালের দেহের বাইরে থাকা  ক্যালসিয়াম কার্বনেট-এর বহিঃ কঙ্কাল একটা শক্ত প্রাচীর গঠন করে প্রবাল প্রাচীর তৈরি করে । প্রবাল প্রাচীরে ২৫% সামুদ্রিক প্রজাতির জীবের আশ্রয়স্থল । মাছ, মোলাস্কা, স্পঞ্জ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাণী প্রবাল প্রাচীরে বাস করে । বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এই প্রবাল প্রাচীর বিপন্ন হয়ে পড়ছে । ১৯৮৮ সালে প্রায় ১৬% প্রবাল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল । ভারত মহাসাগরে জলের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রবাল প্রাচীর গুলিতে মাছেদের আদর্শ বাসস্থান আর থাকছেনা । আবার লোভী মানুষ প্রবাল চুরি করে এদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে । মৃত প্রবালের সাদা বা রঙিন কঙ্কালের সৌন্দর্য আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করে ।

  পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী ছড়িয়ে আছে । আবার খালি চোখে আমরা দেখতে পাইনা এমন জীবরাও রয়েছে । পৃথিবীতে এরকম অনেক অঞ্চল রয়েছে যেখানে খুব বেশি প্রজাতির জীব আছে । আমাদের ভারতবর্ষে জীববৈচিত্র্যে এত বেশি যে ভারতবর্ষকে ‘অতি বৈচিত্র্যের’ দেশ বলা হয় । কিন্তু, বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাঁদের আজ ধ্বংসের মুখে পড়তে হয়েছে । গত ৫০০ বছরে ৭৮৪ টি প্রজাতি পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে গেছে । এদের মধ্যে রয়েছে ৩৩৮ টি মেরুদণ্ডী, ৩৫৯ টি অমেরুদণ্ডী, ৮৭ টি উদ্ভিদ প্রজাতি । বর্তমান সময়ে প্রায় ১৫,০০০ টি প্রজাতি ধ্বংসের মুখে রয়েছে । গত ২০ বছরে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়েছে ২৭ টি প্রজাতিযে জীব গুলি পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে – বাংলার শকুন, বাঘ, চিতা, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, একশৃঙ্গ গণ্ডার ইত্যাদি । আমাদের সবার কর্তব্য হল পৃথিবীর জীব গুলিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো ।

  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । ভূগোল ও বিজ্ঞান বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে ভূগোল ও বিজ্ঞান লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 
 
অর্ডার করতে নীচের লিঙ্কে প্লিজ ক্লিক করুন।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পৃথিবীতে কি সত্যি নরকের দরজা বলে কিছু আছে ?.


 আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে - মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর স্থান হয় স্বর্গে বা নরকে । স্বর্গ বা নরকের কথা শোনেননি এমন একটা মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবেনা । অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে স্বর্গ বা নরক রয়েছে । কিন্তু, আপনি কি মৃত্যুর আগে নরকের দরজা দেখার ইচ্ছা করেন ? তাহলে আমি আপনাদের এখন সেই নরকের দরজার কথা বলবো । কথাটা শুনে আপনার হয়তো অবাক লাগছে ? অবাক হবার কিছু নেই । পৃথিবীয়ে এমন একটি জায়গা আছে যাকে বলা হয় নরকের দরজা । সেই নরকের দরজা আসলে কি ? জানতে হলে আমাদের এই লেখাটা শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়তে থাকুন ।


  তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির একটি সহজ সাধারণ স্থান হল দরওয়াজা গ্রাম । রাজধানী আসকাবাদ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । মাত্র ৩০০ মানুষের বসবাস রয়েছে সেই গ্রামে । সেখানে গেলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন, হাড়হিম হয়ে যাবে, গায়ে কাটা দেবে । এখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন একটি বড়ো আগুনের গর্ত । 


যার ব্যাস ৬৯ মিটার ও গর্ত ৩০ মিটার দীর্ঘ গভীর । সেই গর্তের মধ্যে এখন দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, যে আগুন কখন নেভেনা । এই কারণের জন্য গ্রামটি আলাদা মাত্রা পায় ।
রাতের বেলা আগুনের শিখাগুলো বেশ স্পষ্ট হয় । সেসময় দূর থেকে এই দৃশ্য ভয়ংকর সুন্দর লাগে ভ্রমণবিলাসী মানুষদের জন্য এটি একটি বিস্ময়কর দৃশ্য গ্রামের মানুষরা সেই গর্তটির নাম দিয়েছেন ‘নরকের দরজা’ । আবার এটি শয়তানের সুইমিং পুলনামেও  পরিচিত

 এই গর্তটি প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয়নি । মানুষের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে । ১৯৭১ সালের আগেও এর কোনও অস্তিত্ব ছিল না সেই সময় তুর্কমেনিস্তান সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল । ১৯৭১ সালে সোভিয়েত রাশিয়া বিভিন্ন এলাকাতে তেল সংগ্রহের জন্য অভিযান চালায় । সোভিয়েত রাশিয়ার অনুসন্ধানকারীরা এই জায়গাটি আবিষ্কার করেন । 

  প্রথমে মনে করা হয় যে এলাকাটি ছিল একটি তেলের খনি । তেল সংগ্রহের জন্য সেখানে আস্তানা তৈরি করা হয় । বিভিন্ন ভাবে তেল তোলার চেষ্টা করা হয় । তার জন্য জায়গাটি খনন করা শুরু হয় । কিছুটা খোঁড়ার পর সেখানে দেখা যায় যে সেখান থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হচ্ছে । সেখানে দুর্ঘটনার ঘটে, তারফলে কারোর কোনও ক্ষতি না হলে মাটি ধসে পুরো ড্রিলিং রিগসহ পড়ে যায় । তখন প্রচুর বিষাক্ত গ্যাস বের হতে থাকে ।


 এরপর সেখানে ভূতাত্ত্বিকরা আসেন, গবেষণার পর তাঁরা বিষাক্ত মিথেন গ্যাসের ব্যাপারে জানতে পারেন । তাঁদের ধারণা ছিল যে এখানে সামান্য পরিমাণে গ্যাস রয়েছে । পরিবেশে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার জন্য তাঁরা পরামর্শ দিলেন যে গ্যাস উদ্গিরন মুখটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে রাখা হোক । কিন্তু, তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণ হয় । কারণ সেই ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সেই আগুন এখন জ্বলছে ।

  এই আগুন কবে নিভবে এর উত্তর কারোর জানা নেই । এর তাপ এত বেশি যে দু মিনিটের বেশি সময় কেউ এর পাশে দাঁড়াতে পারেনা । ২০১০ সালে তুর্কমেনিস্তানের রাষ্ট্রপতি এটি বন্ধের প্রস্তাব দেন । কারণ হিসাবে অন্যান্য এলাকাতে যাতে গ্যাস তোলার প্রভাব না পড়ে । তুর্কমেনিস্তান গ্যাস মজুদের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, তাঁরা বিভিন্ন দেশে গ্যাস রপ্তানি করে ।

  পর্যটকরা প্রতিবছর এখানে বেড়াতে আসেন । গ্যাস ক্ষেত্রটি ও পাশাপাশি অবস্থিত মরুভূমি পর্যটকদের কাছে বেড়ানোর প্রিয় স্থান । আপনি চাইলে আপনার নিজের চোখে জায়গাটি দেখে আসতে পারেন ।


     আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

    আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ইন্টারনেটে কোনও তথ্য অনুসন্ধান করবেন কিভাবে ?.


  আমাদের বর্তমান যুগ হল আধুনিক যুগ । ধীরে ধীরে তা অত্যাধুনিক যুগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আজ আর আমাদের কাছে কোনও কিছু অজানা থাকছেনা । সমস্ত কিছু আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পেয়ে যেতে পারেন । ইন্টারনেটে কোন তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য আমাদের প্রয়োজন হয় একটি বিশেষ সফটওয়ার, যাকে বলা হয় সার্চ ইঞ্জিন । এই সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে আপনি কোন তথ্য অনুসন্ধান করতে পারবেন । কয়েকটি বিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিনের নাম হল –  Google, Bing, Yahoo, Ask.com, AOL.com, Baidu, DuckDuckGo ইত্যাদি

  
  ইন্টারনেটে কোন তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য যে সফটওয়ার বা প্রোগ্রাম কোন ওয়েবসাইট, ওয়েবপেজ বা কোন ইন্টারনেটের ফাইল সন্ধান করতে সাহায্য করে তাকে বলে সার্চ ইঞ্জিন । যখন আপনি কোন ওয়েবপেজ সার্চ করবেন তখন আপনাকে প্রথমে সার্চ ইঞ্জিনের ‘টেক্স বক্সে’ যা সন্ধান করবেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত কোন শব্দ বা তথ্য দিতে হবে । যেটাকে বলা হয় সার্চ টেক্স বা কি-ওয়ার্ড । এটার দরকার হয় বেশি যখন আপনি কোন ওয়েব পেজ সন্ধান করার সময় কোন নির্দিষ্ট Url জানেন না ।

  Url হল কোন ওয়েব সাইটের নির্দিষ্ট ঠিকানা । আপনার যদি Url জানা থাকে তাহলে আপনি সাথে সাথে কোন ওয়েব পেজে সহজে যেতে পারবেন । আমার ওয়েবসাইটের Url হল https://janaajana24.blogspot.com । ইন্টারনেটে তথ্যগুলি যে বিশেষ কম্প্যুটারে জমা থাকে তাকে তাকে বলে ওয়েব সার্ভার । ওয়েব ব্রাউজার হল একটি বিশেষ প্রোগ্রাম যা ইন্টারনেটে থাকা তথ্যগুলিকে সার্চ ও দেখার সুবিধা প্রদান করে । ওয়েব পেজে থাকা হাইলাইটেট টেক্স বা ইমেজকে গুলিকে হাইপার লিঙ্ক বলা হয় ।  হাইপার লিঙ্ক আন্ডার লাইন ও রঙিন হয় । ইন্টারনেটে তথ্যগুলি আমরা যে পেজে দেখি তাকে ওয়েব পেজ বলে ।

  সার্চ করার পদ্ধতি - কোন তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য আপনাকে প্রথমে যে কোন একটা সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য নিতে হবে । তারপর সার্চ বক্সে আপনি কি জানতে চান তার সম্বন্ধে কিছু শব্দ লিখুন । ধরুন আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্বন্ধে সন্ধান করতে চাইছেন, তবে আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  লিখবেন । এরপর সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে সার্চ লিস্ট দেখাবে । এবার আপনি আপনার পছন্দের হাইপার লিঙ্ক-এ ক্লিক করবেন । এইভাবে অনুসন্ধান করে আপনি আপনার পছন্দমত সিনেমা, বই, খেলা রান্নার রেসিপি বা অন্য কোন আলাদা বিভাগ সন্ধান করতে পারেন ।


 গুগলের সাহায্য সার্চ করার পদ্ধতি – আমরা যখন ইন্টারনেটে কোন তথ্য সার্চ করার কথা ভাবি তখন আমাদের প্রথমে গুগলের কথা মনে পড়ে । ইন্টারনেটে তথ্য সার্চ করার জন্য গুগল সবথেকে জনপ্রিয় ও সবার কাছে পরিচিত একটি কোম্পানি । গুগল আমাদের বিভিন্ন তথ্য সার্চ করার জন্য অনেক সাহায্য করে । প্রথমে আপনাকে www.google.com যেতে হবে বা গুগল অ্যাপ খুলতে হবে । তারপর আপনি গুগলের হোম পেজ দেখতে পাবেন । এবার আপনি যা জানতে যান সেই সম্বন্ধে কিছু শব্দ টাইপ করুন বা এখন ভয়েস দিয়ে বলার সুবিধা আছে, ভয়েসে বলুন  । গুগল এবার আপনাকে আপনার দেওয়া শব্দের সাথে মিল রয়েছে এমন কিছু ওয়েব পেজ দেখাবে । আপনি আপনার পছন্দমত পেজটি বেছে নিতে পারেন, যে পেজটিতে আপনার দেওয়া তথ্যের সাথে বেশি মিল আছে । ব্যাক অপশনের দ্বারা আপনি আবার অন্য পেজ বেছে নিতে পারেন ।

  গুগলের সাহায্য ফটো সার্চ করার পদ্ধতি –  গুগল শুধু ওয়েবপেজ সার্চ করেনা, গুগল এর সাথে ইমেজ, শপিং, ম্যাপ, ন্যুজ ইত্যাদি সার্চ করে । আপনি যদি গুগলের ফটো ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনি গুগলের হোম পেজে ‘ইমেজ’ ক্লিক করবেন । এরপর আপনি কি ফটো দেখতে চান সেই সম্বন্ধে কিছু টাইপ করুন । এরপর সার্চ ক্লিক এ করুন । গুগল আপনাকে আপনার দ্বারা সার্চ করা ইমেজ বা তার সাথে সম্পর্কযুক্ত ইমেজ দেখাবে । আপনি আপনার পছন্দমত ফটোটিতে ক্লিক করুন । আপনি চাইলে ফটোটি আপনার মোবাইল বা কম্প্যুটারে সেভ করে রাখতে পারেন ।


 Youtube এর সাহায্যে আপনি আপনার পছন্দের তথ্য সম্পর্কিত ভিডিও সার্চ করতে পারেন । Youtube এখন খুব একটি জনপ্রিয় মাধ্যম । যেখানে আপনি আপনার পছন্দের তথ্য পাবেন ও আপনি নিজের ভিডিও বানিয়ে ছাড়তে পারেন ।

 আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনও প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । ইন্টারনেট বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে ইন্টারনেট লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

প্রাচীন বাংলার ভৌগলিক অবস্থান কেমন ছিল ?.


   আমরা বর্তমানে যে অংশে বাস করি তাঁর নাম পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ । এই স্থানের নাম আগে কি ছিল ? এর সীমা বিভাগ কি ছিল ? আমাদের মনে রাখা দরকার যে এটি হল প্রায় এক-দেড় হাজার বছর আগের দিনের কথা । আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ আলাদা আলাদা সময় বিভিন্ন ভৌগলিক বিভাগের অন্তর্গত ছিল । এখন আমরা প্রাচীন বাংলার প্রধান প্রধান ভৌগলিক বিভাগ গুলি সম্বন্ধে জানবো । সেই সময় এই এলাকাগুলি আজকের তুলনায় অনেক আলাদা ছিল  । 

  বঙ্গ নামটি প্রথম আমরা উল্লেখ পাই ঋকবেদের ঐতরেয় আরণ্যকে । সেই সময় প্রাচীন বাংলা বলতে যে অঞ্চলটিকে বোঝানো হত তা  ভৌগলিক দিক দিয়ে কোন বড়ো অঞ্চল ছিলনা । প্রাচীন বাংলার জনপথ গুলির মধ্যে বঙ্গ একটি বিভাগ ছিল । মহাভারতে উল্লেখ করা হয়েছে যে বঙ্গ, পুণ্ড্র, সুহ্ম, তাম্রলিপ্ত ইত্যাদি এক একটি আলাদা রাজ্য ছিল । কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে এর উল্লেখ পাওয়া যায় । কালিদাসের রঘুবংশম কাব্যে বঙ্গ ও সুহ্ম নাম দুটির উল্লেখ আছে । খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকের ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই-সিরাজের লেখাতে বঙ্গ রাজ্যের কথা পাওয়া যায় । মুঘল যুগের ঐতিহাসিক আবুল ফজল ‘আইন-ই-আকবরি’তে এই এলাকাকে সুবা বাংলা বলেছেন ।


এরপর ষোড়শ, সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে ইউরোপের ভ্রমনকারী ও অন্যান্যরা এখানে আসেন । তাঁরা নাম দেন বেঙ্গালা । স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত এই বিরাট অঞ্চল বাংলা বা বাংলাদেশ নামে পরিচিত ছিল । ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় বাংলার পশ্চিম অংশের নাম হয় পশ্চিমবঙ্গ । আর পূর্ব ভাগ চলে যায় পাকিস্তানের অংশে । তাঁর নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান । ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন দেশের মর্যাদা লাভ করে । তাঁর নতুন নাম হয় বাংলাদেশ ।

  প্রাচীন বাংলার সীমা তিনটি নদী ভাগীরথী, পদ্মা, মেঘনা দিয়ে তৈরি ছিল । এর এক একটি অঞ্চল দীর্ঘকাল স্বাধীন ছিল, আবার কয়েকটি অঞ্চল অন্য অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে । যখন কোন রাজ্যের শাসন কর্তা রাজ্য বিস্তার করতেন তখন এই অঞ্চলের সীমা পরিবর্তন হয়ে যেত । প্রাচীন বাংলার প্রধান প্রধান অঞ্চল গুলি হল – পুণ্ড্রবর্ধন, বরেন্দ্র, বঙ্গ, গৌড়, সমতট, হরিকেল, রাঢ়, বঙ্গাল । এদের মধ্যে বঙ্গ, গৌড়, পুণ্ড্র ইত্যাদি হল এক একটি জনগোষ্ঠীর নাম । তাঁরা যেসব অঞ্চলে বাস করতেন সেই অঞ্চলটির নাম তাদের(জনগোষ্ঠীর) নাম অনুসারে হয় ।

  পুণ্ড্রবর্ধন ছিল প্রাচীন বাংলার বড়ো অঞ্চল । এই অঞ্চলটি বর্তমানে বগুড়া, রাজশাহী, দিনাজপুর ও পাবনা এলাকায় ছিল । গুপ্ত যুগে এই এলাকাটি একটি ভুক্তি বা শাসন এলাকা ছিল । বরেন্দ্র অঞ্চলটি ভাগীরথী ও করতোয়া নদীর মধ্যের অংশে ছিল । বঙ্গাল এলাকাটি দক্ষিণ সীমান্তবর্তী বঙ্গোপ সাগরের উপকূল অঞ্চলে ছিল ।


 প্রাচীনকালে ভাগীরথী ও পদ্মা নদীর মাঝে ত্রিভুজাকৃতি বদ্বীপ অঞ্চলকে বঙ্গ বলা হয় । মনে করা হয়- ভাগীরথীর পশ্চিমদিকের অঞ্চল এর মধ্যে ছিল । পরে ভাগীরথীর পশ্চিমদিকে রাঢ় ও সুহ্ম নামে দুটি আলাদা অঞ্চলের উৎপত্তি হলে বঙ্গের সীমানা পরিবর্তন হয়ে যায় । ঢাকা, বিক্রমপুর, বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলকে সেই সময় বঙ্গ অঞ্চল বলে মানা হয়ে থাকে ।

  প্রাচীন ও মধ্য যুগে গৌড় বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল । গৌড় বলতে একটি জনগোষ্ঠীর নাম বোঝায় । মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে গৌড় তৈরি হয়েছিল । রাজা শশাঙ্কের আমলে গৌড়ের সীমানা বেড়ে যায় ।  মুর্শিদাবাদ ছিল গৌড়ের প্রধান এলাকা । শশাঙ্কের আমলে পুণ্ড্রবর্ধন থেকে ওড়িশার উপকূল পর্যন্ত গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত হয় । অষ্টম ও নবম শতকে সমগ্র পাল সাম্রাজ্যকে গৌড় বলে বোঝানো হত ।

  রাঢ় অঞ্চলের দুটি ভাগ ছিল, উত্তর রাঢ় আর দক্ষিণ রাঢ় । উত্তর রাঢ় আর দক্ষিণ রাঢ়ের সীমানা অজয় নদ ছিল । উত্তর রাঢ় অঞ্চলটি ছিল মুর্শিদাবাদের পশ্চিম ভাগ, বীরভূম, সাঁওতাল পরগনার একাংশ, বর্ধমানের কাটোয়া । দক্ষিণ রাঢ় অঞ্চল ছিল হাওড়া, হুগলী, বর্ধমানের বাকি অংশ । অজয় ও দামোদরের মধ্যবর্তী এলাকা । দক্ষিণ রাঢ় বঙ্গোপ সাগরের কাছাকাছি ছিল ।


  প্রাচীন সমতট অঞ্চলটি ছিল মেঘনা নদীর পূর্ব দিকে । বাংলাদেশের নোয়াখালী, কুমিল্লা ছিল প্রাচীন সমতট অঞ্চল । মেঘনা নদীর জন্য সমতট বাকি অংশের থেকে আলাদা ছিল । তাই সমতটকে প্রাচীন বাংলায় সীমান্তবর্তী এলাকা বলে মনে করা হয় । সমতটের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চট্টগ্রাম, উপকূল অঞ্চল প্রাচীন বাংলায় হরিকেল নামে পরিচিত ছিল ।

  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । ইতিহাস বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে ইতিহাস লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর গুলি কি কি ?.


১) অবিভক্ত বাংলার শেষ মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন – সাহীদ সোহরাওয়ার্দি । 
২) মেদিনীপুর বোমা ষড়যন্ত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কে ছিলেন – যোগজীবন ঘোষ ।
৩) ১৯৩০ সালে মেদিনীপুরে কোথায় প্রথম লবণ আইন অমান্য আন্দোলন হয়েছিল – কাঁথির পিছাবনিতে ।
৪) মেদিনীপুরের জেলাশাসক রবার্ট ডগলাস ১৯৯৩২ সালে কার গুলিতে নিহত হন – প্রভাংশু শেখর পাল, সহযোগী প্রদ্যোৎ কুমার ভট্টাচার্য ।
৫) ভারতের সংবাদ পত্রের স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে কোন গভর্নর জেনারেল প্রথম আইন করেন – লর্ড ওয়েলেসলি ।
৬) ভারতে প্রকাশিত প্রথম সংবাদ পত্রের নাম কি – অগাস্টান হিকি সম্পাদিত The Bengali Gazette


৭) পাইক বিদ্রোহ কবে শুরু হয় – ১৮১৭ সালে ।
৮) এনফিল্ড রাইফেল কি – এক প্রকার রাইফেল, যার টোটায় গরু ও শূকরের চর্বি ছিল ।
৯) ভারতবর্ষে স্বায়ত্ত শাসনের দাবিতে প্রথম কোন রাজনৈতিক দল আন্দোলন করেন – হোমরুল লিগ ।
১০) কেশরী পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন – বাল গঙ্গাধর তিলক ।

১১) ‘ফরাজি’ শব্দের অর্থ কি – ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য ।
১২) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রথম বিশাল সমাবেশ কবে, কোথায় হয় – ১৯০৫ সালে ৭ আগস্ট, কলকাতায় ।
১৩) ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে কবে বিহার ও ওড়িশা দুটি আলাদা প্রদেশ হিসাবে স্বীকৃত পায় – ১৯১২ সালে ।
১৪) বিহারের চম্পারন জেলায় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী প্রথম কাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন – অত্যাচারিত জমির মালিক ও নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে ।
১৫) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৮৮৫ সালে ।
১৬) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতির নাম কি – সরোজিনী নাইডু ।
১৭) ১৯০৬ সালে কোন শহরে ‘মুসলিম লিগ’ প্রতিষ্ঠিত হয় – ঢাকা ।
১৮) প্রথম কে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন – মাদাম ভিকাজি কামা ।
১৯) গান্ধীজী প্রথম কোন আন্দোলনের সময় অনশনকে আন্দোলনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেন – ১৯১৮ সালে আমেদাবাদে বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকদের আন্দোলনের সময় ।
২০) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন কোথায় হয় – বোম্বের গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজে ।
২১) সীধু-কানু কোন বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন – সাঁওতাল বিদ্রোহে ।
২২) বাংলায় বর্গি হানা কত সালে শুরু হয় – ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে ।
২৩) ‘অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি’ কে প্রবর্তন করেন – লর্ড ওয়েলেসলি ।
২৪) বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন – ওয়ারেন হেস্টিং ।
২৫) ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট স্থাপিত হয় কত সালে – ১৭৭৪ সালে ।

২৬) ভারতে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা কে চালু করেন – লর্ড কর্নওয়ালিস
২৭) ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে 
২৮) লাহোর চুক্তি কত সালে সাক্ষরিত হয় – ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে ।
২৯) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কে চালু করেন - লর্ড কর্নওয়ালিস
৩০) ‘অব-শিল্পায়ন’ কথাটির অর্থ কি – শিল্পের অবনমন ।
৩১) সাগরে সন্তান বিসর্জন প্রথা কে বন্ধ করেন - লর্ড ওয়েলেসলি ।
৩২) বিধবা বিবাহের পক্ষে আন্দোলন কে করেছিলেন – ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ।
৩৩) আত্মীয় সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন – রাজা রামমোহন রায় ।
৩৪) সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন – লর্ড ক্যানিং ।
৩৫) নীল দর্পণ নাটক কে রচনা করেন – দীনবন্ধু মিত্র ।
৩৬) সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন কে করেছিলেন - রাজা রামমোহন রায় ।
৩৭) হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠা করেন কে – নবগোপাল মিত্র ।
৩৮) বঙ্গভঙ্গ কবে রদ হয়েছিল – ১৯১১ সালে ।
৩৯) গান্ধীজী তাঁর রাজনৈতিক আন্দোলন কোথায় শুরু করেছিলেন – দক্ষিণ আফ্রিকায় ।
৪০) স্বরাজ্য দল কে তৈরি করেছিলেন – চিত্তরঞ্জন দাশ ।

৪১) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে ‘ভারতের বিজাতীয় কংগ্রেস’ কে বলেছিলেন – অরবিন্দ ঘোষ ।
৪২) ‘স্বত্ত্ববিলোপ নীতি’ ভারতে কে প্রবর্তন করেন – লর্ড ডালহৌসি ।
৪৩) কলকাতা, মাদ্রাজ, মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় কবে প্রতিষ্ঠা হয় – ১৮৫৭ সালে ।
৪৪) কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে ‘পূর্ণ স্বরাজ’ এর দাবি গৃহীত হয় – লাহোর অধিবেশনে (১৯২৯) ।
৪৫) ‘এশিয়াটিক সোসাইটির’ প্রতিষ্ঠাতা কে – স্যার উইলিয়াম জোন্স ।
৪৬) ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রথম কার ফাঁসি হয়েছিল – মহারাজা নন্দ কুমারের ।
৪৭) চট্টগ্রামে ব্রিটিশ অস্ত্রাগার কবে লুট হয় – ১৯৩০ সালে ।
৪৮) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কবে শুরু হয় – ১৯১৪ সালে ।
৪৯) নৌ বিদ্রোহের সূচনা কোথায় হয় – বোম্বাই/মুম্বাইতে ।
৫০) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কবে তৈরি হয় – ১৬০০ সালে ।
৫১) আজাদ হিন্দ সরকার কোথায় স্থাপিত হয় – সিঙ্গাপুরে ।
৫২) সাময়িক আজাদ হিন্দ সরকার কবে গঠিত হয় – ১৯৪৩ সালে ২১ অক্টোবর ।
৫৩) ভারত বিভাজনের পরিকল্পনা কে করেছিলেন – লর্ড ম্যাউন্টব্যাটেন ।
৫৪) ভারতীয় গণপরিষদের সভাপতি কে ছিলেন – রাজেন্দ্র প্রসাদ ।
৫৫) ব্রিটিশরা কেন ভারতে উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন – ভারতের সম্পদ শোষণ করার জন্য ।
৫৬) লর্ড ওয়েলেসলির ‘অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি’ কেন সফল হয়েছিল – দেশীয় রাজ্যগুলির মধ্যে ঐক্য ছিল না বলে ।
৫৭) সিপাহি বাহিনীতে জাত ভিত্তিক মনোভাব কেন দেখা দিয়েছিল -  সিপাহিদের জাতের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়েছিল ।
৫৮) ব্রিটিশ আমলে ভারতে প্রথম জনগণনা কবে হয় – ১৮৭২ সালে ।
৫৯) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা কবে থেকে চালু হয় – ১৮৫৩ সালে ।
৬০) ভারতবর্ষ কবে স্বাধীন হয় – ১৯৪৭ সালে ১৫ আগস্ট ।
  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । ইতিহাস বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে ইতিহাস লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 


অর্ডার করতে নীচের লিঙ্কে প্লিজ ক্লিক করুন।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।