বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৯

সুস্থ ও নীরোগ থাকার ১০ টি উপায় কি কি ?


 স্বাস্থ্য শুধুমাত্র রোগ থেকে মুক্তি বা নীরোগ দেহ বা শারীরিক সুস্থতা নয়স্বাস্থ্য হল ব্যক্তির সামাজিকমানসিকও শারীরিক গুণাবলির এমন একটি সমন্বয়যা তাকে পরিপূর্ণ জীবন যাপনে সহায়তা করে - বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা  স্বাস্থ্য মানুষের জীবনের সবথেকে বড় সম্পদ। আমরা সবাই চাই সুস্থ নীরোগ সুন্দর জীবন । তাই আমাদের খাদ্যপানীয়আলো-বাতাসস্নানপোশাকসুনিদ্রাবিশ্রাম ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখা দরকার ।


 এখন আমরা জানব যে আমাদের শরীর সুস্থনীরোগ রাখার উপায় গুলি কি কিসব সময় এগুলি মেনে চলার চেষ্টা করবেনতাঁর ফলে আপনি পাবেন সুস্থনীরোগপৃথিবীতে বাঁচার জন্য দীর্ঘ জীবন।

১) খাদ্য – খাদ্য হল আমাদের শরীরের প্রধান শক্তির উৎস। আমাদের বয়স ও শরীরের ক্ষমতা অনুসারে সহজপাচ্যপুষ্টিকরলঘু খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। শিশুদের ও বয়স্কদের পরিমাণ অনুসারে খাবার খাওয়া উচিত। আমরা যে সমস্ত খাবার খাই তাহলোক) প্রোটিন – শরীরের তাপ উৎপাদনক্ষয়পুরনশরীরের উপাদান নির্মাণ করে। সিমডালকাঁঠালবাদামতিলমাশরুম প্রভৃতি থেকে প্রোটিন পাই। খ) ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় – শরীরে মেদ বা চর্বি তৈরি করে । মাছমাংসডিমদুধঘিছানাইত্যাদি থেকে ফ্যাট পাওয়া যায়। গ) কার্বোহাইড্রেট – শরীরের কাজ করার ক্ষমতাতাপ উৎপাদনদেহে তেজ তৈরি করে। আলুভুট্টাগমআপেলমসুরআখমধুডিমেতে পাওয়া যায়। ঘ) ভিটামিন – ভিটামিনের আরেক নাম খাদ্যপ্রাণ। এর ওভাবে শরীর দুর্বল হয়ে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করে। ভিটামিন পাওয়া যায় আমগাজরডালসবুজ শাকসবজিসয়াবিনকলাদৈমাখনডিমমাংসতে। ঙ) লবণ – লবণ আমাদের দেহের জন্য দরকারি উপাদান। আমরা শাকসবজিফলমূল এবং আরও নানা খাবার থেকে লবণ পাই। আমাদের এই খাবার গুলি খেতে হবে।

 ২) স্নান করা – শরীর সুস্থ রাখার জন্য আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত স্নান করা উচিৎ। স্নান করার জন্য পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ জল ব্যবহার করবেন। খারাপপচা জল ব্যবহার করবেন না। যদি করেন তাহলে আপনার বিভিন্ন চর্ম রোগ হবে। ঠাণ্ডাপরিষ্কারনিরাপদজল ব্যবহার করবেন। যদি পারেন একটু সকাল সকাল স্নান করবেন। সকালে স্নান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ঠাণ্ডা জলের সাথে কিছুটা গরম জল ব্যবহার করতে পারেন। খুব বেশি সময় জলে থাকবেন না। স্নানের আগে ভাল করে সর্ষের তেল মেখে নেবেন। স্নানের সময় জীবাণু নাশক সাবান মাখুন।

৩) পরিষ্কার পোশাক – আমরা প্রতিদিন যে জামা কাপড় ব্যবহার করি তা নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। জামা কাপড়ের মাধ্যমে বিভিন্ন চামড়া বা ত্বকের রোগ ছড়ায়। একই পোশাক পর পর কয়েক দিন ব্যবহার করবেন না। পরের বার ব্যবহার করার আগে ধুয়ে নেবেন। না ধুলে আগের ঘামদুর্গন্ধ থেকে চামড়ার সমস্যা দেখা যাবে। বেশি পুরনো জামা কাপড় ব্যবহার করবেন না। যদি পারেন ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে পুরনো জামা কাপড় বদলে ফেলুন। পুরনো কাপড় ব্যবহার করলে আপনার পুরনো চামড়ার সমস্যা ফিরে আসবে।

৪) জলআলোবাতাস – জল আমাদের খাদ্য পরিপাকঅন্যান্য কাজে সাহায্য করে। জল খেতে হলে বিশুদ্ধ জল খান। জল ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে খাওয়া সবথেকে ভাল।খাবার খাওয়ার আধঘণ্টা পরে ঠাণ্ডা জল খান। জাদের পেতের সমস্যা আছে তারা সামান্য গরম জল খাবেন। জলের বিকল্প হিসাবে বিভিন্ন ফলের রসআখের রসডাবের জল খেতে পারেন। যে ঘরে সহজে আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে সে ঘরে থাকবেন। উপযুক্ত আলো স্বাস্থ্যকরশরীরের সুস্থতার জন্য রদের দরকার। সেকারণে ছোট শিশুদের সকালের রোদে রাখা হয়। কম বা বেশি আলো দৃষ্টিশক্তি খারাপ করে দেয়। উপযুক্ত আলো আমাদের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। জীবন ধারণ ও শ্বাস গ্রহণ করার জন্য আমরা বাতাসের উপর নির্ভর করি। নির্মল ও বিশুদ্ধ বাতাস মানুষকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান করে। বিশুদ্ধ বায়ুতে  উপযুক্ত পরিমাণ অক্সিজেন থাকে।

৫) শরীরচর্চা – বর্তমান জীবনে কারোর কাছে অতিরিক্ত সময় থাকেনা। সবাই নিজের কাজ নিয়ে থাকেন। শরীরের গঠন তাই ঠিকভাবে হয়না। শরীর ঠিক রাখতে প্রতিদিন শরীরচর্চা করা দরকার। প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় কম করে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। হাঁটা হল সবথেকে সেরা ব্যায়াম। কিছু সময় সাঁতার কাটতে পারেন। বিভিন্ন যোগ ব্যায়াম করবেন ।


৬) মানসিক চিন্তা – আমরা অনেক সময় মানসিক চিন্তার কাড়নে অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমদের জীবনে অনেক রকম ঘটনা ঘটে থাকে। মনে রাখবেন অতীতে যা হয়েছে সেটা আপনার হাতে আর নেই। সেটাকে আপনি আর পালটাতে পারবেন না। তাই এমন ঘটনা বেশি দিন মনে রাখবেন না। একটা লক্ষ নিয়ে সেদিকে আগিয়ে যান। অতিরিক্ত চিন্তা করলে আপনার মাথার বুদ্ধিস্মৃতিকমে যায়। তখন কোন কাজ করতে মন চায়না। কখন কি কাজ করতে হবে তা ভুলে যান। এরকম হলে কাজের কথা একটা ডাইরিতে লিখে রাখবেন। চিন্তা হল পৃথিবীতে সব থেকে বড় অসুখ। আজ থেকে চিন্তা ছেড়ে সুখী ভাবে বাঁচুন 

৭) শরীরের যত্ন – সুস্থনীরোগ থাকার জন্য আমাদের শরীরের যত্ন নেওয়া একান্ত দরকার। প্রতিদিন মিয়মিত স্নান করাদাঁত মাজাচোখ-মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে। খাবার পর দাঁত ব্রাশ করবেন। শিশুরা অতিরিক্ত চকলেট বা মিষ্টি খাবার খেলে দাঁতের সমস্যা হতে পারে। কান পরিষ্কার রাখবেকানে ঠাণ্ডা লাগাবেন ন। ঠাণ্ডা  পরিষ্কার জল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন। ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী হাতের নখের দ্বারা জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। তাই নিয়মিত হাত ও পায়ের নখ কাটবেন।

৮) সুঅভ্যাস গঠন – আমাদের উচিত কুঅভ্যাস ত্যাগ করাসুঅভ্যাস গঠন করা। সুঅভ্যাস গুলি হল – নিজের কাজ নিজে করাছবি আঁকাগান করাভোরে ঘুম থেকে ওঠাখেলাধুলা করাদেহ পরিষ্কার রাখা। সমাজ ও পরিবার থেকে মানুষ এগুলো পায়।

৯) রোগের ধারনা – আমরা যখন সুস্থ থাকি তখন কাজে উৎসাহ থাকেকিন্তু যদি আমরা অসুস্থ হই তখন কাজে উৎসাহ  থাকেনা। প্রধানত দুটি কারণের ফলে আমাদের রোগ সংক্রমণ হয়। ক) সংক্রমিত – আন্ত্রিককলেরাএইডস ইত্যাদি। এই রোগগুলি এক জীব থেকে আরেক জীবে ছড়িয়ে পরে। দূষিত জল পান করাখাদ্যে জীবাণুর সংক্রমণ ইত্যাদির ফলে এইসব রোগ হয়। খ) অসংক্রমিত – মধুমেহহৃদরোগমানসিক চাপভিটামিন ও খনিজ লবণের অভাবঅপুষ্টিজিনগত পূর্ব পুরুষদের থেকে আসা রোগ। শরীর অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখিয়ে রোগের পরিচর্যা করবেন।

১০) বিনোদন – সবশেষে বলি জীবনে কাজের চাপ থাকবেতাঁর মধ্যে থেকে একটু আনন্দ খুঁজে নিতে হবে। গান শোনাজোকস পড়ামাসে একবার বেড়াতে যেতে পারেন। মুখে যেন সব সময় একটা হাসি থাকে। প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু শিখুন। আজ থেকে নিজে নতুন ভাবে চলতে শুরু করুন।

  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । স্বাস্থ্য বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 

অর্ডার করতে নীচের লিঙ্কে প্লিজ ক্লিক করুন।
আমাদের আরও পোস্ট পড়ুন - 

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

২টি মন্তব্য:

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷