শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯

আপনার ত্বকের যত্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে করবেন ?


   আমাদের শরীরের মধ্যে সবথেকে বড় অঙ্গ হল আমাদের ত্বক । তাকে যত্ন করা আমাদের অবশ্যই দরকার । সুন্দর ত্বক বলতে আমরা বুঝি পরিছন্ন, কোমল, মসৃণ, সজীব ত্বক । এক জন মানুষের শরীরে ত্বকের ওজন হয় আড়াই থেকে সারে তিন কেজি । সুন্দর ত্বকের সম্মান অর্জন করতে হলে ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যা করবেন, অযত্ন ও অবহেলা করলে ত্বকের ক্ষতি হবে ।


  ত্বকের যত্ন নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে ত্বকের গঠন ও প্রকৃতি সম্বন্ধে । আমাদের এই গরম দেশে প্রধানত চার ধরনের ত্বক দেখা যায় ১) স্বাভাবিক, ২) তৈলাক্ত, ৩) শুষ্ক, ৪) মিশ্র  আপনার ত্বক কি রকমের তা জানার জন্য আপনি সকালে ঘুম থেকে ওঠে একটি টিসু পেপার নিয়ে গালে, কপালে, নাকের দুপাশে, থুতনিতে না ঘসে কিছুক্ষণ চেপে রাখুন । এরপর টিসু পেপারটি দেখুন, যদি দেখেন টিসু পেপারে হালকা তৈলাক্ত ভাব আছে সেই ত্বক স্বাভাবিক । তেলতেলা বা ভিজে ভাব এই ত্বকে থাকেনা ।


    টিসু পেপারে যদি তেলের ছাপ বেশি থাকে সেই ত্বক হয় তৈলাক্ত । গরম কালে ত্বক বেশি তেলতেলা হয় । মেকআপের পর এই ত্বকে বেশি তেলা ভাব দেখা যায় ।

   এবার দেখুন যে টিসু পেপারে প্রায় তেলের ভাব নেই, এই ত্বক শুষ্ক ত্বক । পাতলা ও বলিরেখা এই ত্বকে দেখা যায় । শুষ্ক ত্বক প্রায় ফেটে যায়, শীতকালে আরও শুষ্ক ও ফাটা দেখায় ।

   আবার অনেক মানুষের মিশ্র ত্বক দেখা যায় । শরীরের বিভিন্ন অংশে এদের তৈলাক্ত ভাব থাকে যেমন কপাল, নাক, চিবুকে । বাকি অংশ শুষ্ক দেখা যায় ।


     আপনার  ত্বকের পরিচর্যা করার জন্য কতগুলি নিয়ম পালন করতে পারেন । পরিছন্নতা ত্বকের  সৌন্দর্য নির্ভর করে আমরা কতটা ত্বককে পরিষ্কার, পরিছন্ন থাকি তার উপর । সবসময় চেষ্টা করবেন যতটা পারেন নির্মল, পরিষ্কার, পরিছন্ন থাকার । শরীরে ধুলো, অপরিছন্ন চুল, নখের নীচে ময়লা ইত্যাদি ত্বকের জন্য ক্ষতির কারণ । ত্বকের ময়লা দূর করার জন্য জলের দরকার । প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খাবেন । স্নানের সময় ঠাণ্ডা ও গরম দুধরনের জল ব্যবহার করুন ।

   খাবার খাওয়ার সময় সতেচন হতে হবে । হজমের গণ্ডগোল হলে ত্বকের স্বাস্থ্য খারাপ হয় । পেট পরিষ্কার ও হজম ভাল হলে ত্বক সজীব ও টান টান হয় । প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফল ও শাক সবজি জাতীয় খাবার ত্বকের জন্য খাওয়া দরকার ।
   ঘুম বা নিদ্রা প্রতিটি মানুষের জন্য একান্ত প্রয়োজন । আজ কালকার সময় আমরা ঘরে বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকি, তবু নিয়মিত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম হওয়াটা জরুরি । ত্বককে ভাল রাখতে বাইরের নির্মল হাওয়া ও রোদের প্রয়োজন । আপনি যদি ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে নিয়মিত, বিধিসম্মত ব্যায়াম করতে পারেন । ব্যায়াম করলে ত্বক সুন্দর হয় ।


    ১) স্বাভাবিক ত্বক -  স্বাভাবিক ত্বকের সমস্যা অনেক কোন হয় । হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে, ঠাণ্ডা জল দিয়ে ঝাপটা দেবেন । সারাদিনে কমকরে ৫-৬ বার জলের ঝাপটা দেবেন  ঘরোয়া ভাবে সাবান বা বেসন ব্যবহার করতে পারেন । ২-৩ চামচ বেসন জল দিয়ে গুলে সারা গায়ে মেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । পাতিলেবুর রস, শসার চাকা, আলু থেঁতো ব্যবহার করতে পারেন । স্বাভাবিক ত্বক যাদের তাঁরা সপ্তাহে ১-২ দিন ফেসপ্যাক লাগাতে পারেন । রাতে শোবার আগে মুখ, হাত, পা, পরিষ্কার করবেন । ডিমের কুসুম ও অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক করতে পারেন ।

  ২) শুষ্ক ত্বক – একবার গরম জল আবার পরে ঠাণ্ডা জল দিয়ে সকাল, সন্ধ্যা, রাতে মুখ ধুতে হবে । ডিমের কুসুম ও অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক সপ্তাহে ২-৩ দিন লাগাতে হবে । পরে ঠাণ্ডা জলে মুখ ভাল করে ধুয়ে নেবেন । ময়শ্চারিং লোশন লাগানর পর তুলো দিয়ে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করবেন ।

  ৩) তৈলাক্ত ত্বক – চন্দন না লেবুযুক্ত সাবানের ফেনা ভাল করে মাখবেন । দিনে একবার ময়শ্চারিং লোশন মাখুন । যত বেশিবার পারবেন মুখ ধুবেন । ঘরোয়া ভাবে পাতিলেবুর রস, শসার চাকা, আলু থেঁতো ব্যবহার করলে ভাল । ডিমের সাদা অংশের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে, পরে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন ।


 ৪) মিশ্র ত্বক – এই ত্বকের কিছু অংশ একটু বেশি তেলা ভাব দেখা যায় । উপরের বলা পদ্ধতি গুলি ব্যবহার করবেন । স্বাভাবিক ত্বকের মত যত্ন নিতে হবে । উষ্ণ গরম জলে তুলসী পাতা দিয়ে সবাই সপ্তাহে বা পক্ষে একদিন করে ভাব নেবেন ।

   ঘরোয়া ফেসপ্যাক তৈরির করার পদ্ধতি – কাঁচা হলুদ বাটা ২ চামচের সাথে ৪ চামচ বেসন ও ৪ চামচ দুধ মিশিয়ে স্নানের আগে সারা গায়ে ভাল করে মাখুন । দুধের স্বর ৪ চামচ ও ময়দা ৪ চামচ মিশিয়ে মাখুন । ৪ চামচ চন্দন বাটা, ৪ চামচ দুধের মিশ্রণ বা শসার রস ও ১ চামচ গোলাপ জলের মিশ্রণ লাগাতে পারেন । ৩ চামচ মসুর ডাল বাটা ১ টা ডিমের সাদা অংশ । দুধ, বেসন, কাঁচা হলুদ বাটা ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন ।


   আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । স্বাস্থ্য বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।


0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷