পৃথিবীতে কি সত্যি নরকের দরজা বলে কিছু আছে ?.
আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে - মানুষের
মৃত্যুর পর তাঁর স্থান হয় স্বর্গে বা নরকে । স্বর্গ বা নরকের কথা শোনেননি এমন একটা
মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবেনা । অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে স্বর্গ বা নরক রয়েছে
। কিন্তু, আপনি কি মৃত্যুর আগে নরকের দরজা দেখার ইচ্ছা করেন ? তাহলে আমি আপনাদের
এখন সেই নরকের দরজার কথা বলবো । কথাটা শুনে আপনার হয়তো অবাক লাগছে ? অবাক হবার
কিছু নেই । পৃথিবীয়ে এমন একটি জায়গা আছে যাকে বলা হয় নরকের দরজা । সেই নরকের দরজা
আসলে কি ? জানতে হলে আমাদের এই লেখাটা শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়তে থাকুন ।
তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমির একটি সহজ
সাধারণ স্থান হল দরওয়াজা গ্রাম । রাজধানী আসকাবাদ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত
। মাত্র ৩০০ মানুষের বসবাস রয়েছে সেই গ্রামে । সেখানে গেলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন,
হাড়হিম হয়ে যাবে, গায়ে কাটা দেবে । এখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন একটি বড়ো আগুনের গর্ত ।
যার ব্যাস ৬৯ মিটার ও গর্ত ৩০ মিটার দীর্ঘ গভীর । সেই গর্তের মধ্যে এখন দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন, যে আগুন কখন নেভেনা । এই কারণের জন্য গ্রামটি আলাদা মাত্রা পায় । রাতের বেলা আগুনের শিখাগুলো বেশ স্পষ্ট হয় । সেসময় দূর থেকে এই দৃশ্য ভয়ংকর সুন্দর লাগে । ভ্রমণবিলাসী মানুষদের জন্য এটি একটি বিস্ময়কর দৃশ্য । গ্রামের মানুষরা সেই গর্তটির নাম দিয়েছেন ‘নরকের দরজা’ । আবার এটি ‘শয়তানের সুইমিং পুল’ নামেও পরিচিত ।
এই গর্তটি
প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয়নি । মানুষের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে । ১৯৭১
সালের আগেও এর কোনও
অস্তিত্ব ছিল না ।
সেই সময় তুর্কমেনিস্তান সোভিয়েত রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল । ১৯৭১
সালে সোভিয়েত রাশিয়া বিভিন্ন এলাকাতে তেল সংগ্রহের জন্য অভিযান চালায় । সোভিয়েত
রাশিয়ার অনুসন্ধানকারীরা এই জায়গাটি আবিষ্কার করেন ।
প্রথমে মনে করা হয় যে এলাকাটি ছিল একটি তেলের
খনি । তেল সংগ্রহের জন্য সেখানে আস্তানা তৈরি করা হয় । বিভিন্ন ভাবে তেল তোলার
চেষ্টা করা হয় । তার জন্য জায়গাটি খনন করা শুরু হয় । কিছুটা খোঁড়ার পর সেখানে দেখা
যায় যে সেখান থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হচ্ছে । সেখানে দুর্ঘটনার ঘটে, তারফলে কারোর
কোনও ক্ষতি না হলে মাটি ধসে পুরো ড্রিলিং রিগসহ পড়ে যায় । তখন প্রচুর বিষাক্ত গ্যাস বের হতে
থাকে ।
এরপর সেখানে ভূতাত্ত্বিকরা আসেন, গবেষণার পর তাঁরা বিষাক্ত মিথেন গ্যাসের ব্যাপারে জানতে পারেন । তাঁদের ধারণা ছিল যে এখানে সামান্য পরিমাণে গ্যাস রয়েছে । পরিবেশে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার জন্য তাঁরা পরামর্শ দিলেন যে গ্যাস উদ্গিরন মুখটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে রাখা হোক । কিন্তু, তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণ হয় । কারণ সেই ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সেই আগুন এখন জ্বলছে ।
এই আগুন কবে নিভবে এর উত্তর
কারোর জানা নেই । এর তাপ এত বেশি যে দু মিনিটের বেশি সময় কেউ এর পাশে দাঁড়াতে
পারেনা । ২০১০ সালে তুর্কমেনিস্তানের রাষ্ট্রপতি এটি বন্ধের প্রস্তাব দেন । কারণ
হিসাবে অন্যান্য এলাকাতে যাতে গ্যাস তোলার প্রভাব না পড়ে । তুর্কমেনিস্তান গ্যাস
মজুদের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, তাঁরা বিভিন্ন দেশে গ্যাস রপ্তানি করে ।
পর্যটকরা প্রতিবছর এখানে বেড়াতে আসেন । গ্যাস
ক্ষেত্রটি ও পাশাপাশি অবস্থিত মরুভূমি পর্যটকদের কাছে বেড়ানোর প্রিয় স্থান । আপনি
চাইলে আপনার নিজের চোখে জায়গাটি দেখে আসতে পারেন ।
আমাদের
লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান ।
আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে
আরও পোস্ট পড়তে নিচে অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷