শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯

ভারতের লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের ফলাফল.


   আবার মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে ভারতের প্রধাম মন্ত্রী নির্বাচিত হতে চলেছেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী । নিজের জনপ্রিয়তা কমার বদলে বিপুল সমর্থন পেয়ে আবার তিনি ভারতের দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধান মন্ত্রী হতে চলেছেন । মোদী হলেন ভারতের তৃতীয় প্রধান মন্ত্রী, যিনি পর পর দুবার প্রধান মন্ত্রী হলেন, একক সংখ্যা গরিষ্ঠ নিয়ে । পাঁচ বছর আবার আমরা তাঁকে প্রধান মন্ত্রী হিসাবে দেখতে পাব ।

   গত লোকসভা নির্বাচনে মোদী ঝড় ছিল চোখে পড়ার মত, এবারে সাধারণ ভাবে সেই ঝড় চোখে না পড়লেও, বিজেপি আশা করেছিল যে তারা ৩০০ টির মত আসন পাবে । বিভিন্ন সংথ্যার যে বুথ ফেরত সমীক্ষা তা মিলে গেল বলা যায় । বিরোধী শিবির যে আশা করেছিল তাঁরা আবার ভাল ফল করবে তা আর হলনা । কয়েক মাস আগে দেশের তিনটি রাজ্য গুলিতে বিজেপি হারের সম্মুখিন হয়েছিল সেই তিন রাজ্যে বিজেপি আবার বিপুল আসন পেয়েছেন । ৩০ মে হবে মোদীর শপদ গ্রহন । বিরোধিরা মানলেন তাঁদের নিজেদের ব্যর্থতা ভারতের অধিকাংশ জায়গায় বিজেপি ভাল ফল করেছে । নোটবন্দি, গি.এস.টি, তিন তালাক বিল কোন প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়তে দেখা গেলনা । উত্তর প্রদেশের আমেঠি কেন্দ্রে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী পরাজিত হয়েছেন । এর পর তিনি কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করবে বলে শোনা যাচ্ছে । কংগ্রেসের এই পরাজয়ের পর দলের মধ্যে থেকে অনেকে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেছেন । হারের পর রাহুল বিজেপির স্মৃতি ইরানিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ।
ভারতে মোট আসন – ৫৪২/৫৪৩ টি, এন.ডি.এ – ৩৫২, উই.পি.এ – ৯৫, অন্যান্য – ৯৫,
পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের  ৪২ টি আসনের ফলাফল  --
  পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হাওয়া বি.জে.পির পক্ষে অনেকটা ভাল বলা যায় । যেখানে তাঁদের মাত্র ২ টি আসন ছিল তা বেড়ে হয়েছে ১৮ বাম ও কংগ্রেসের অবস্থান প্রায় মুছে গেছে । কংগ্রেস ২ টি আসন পেলেও বামফ্রন্ট কোন আসন পাইনি । মাঠে ময়দানে নেবে কাজ করার জন্য দলীয় কর্মী নেই, সেই কারনে লোকসভা ভোটে প্রায় মুছে গেছে বামফ্রন্ট । কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এমন রিপোর্ট দিতে চলেছে বামফ্রন্ট । শাসক তৃণমূলের ভোট কমার লক্ষন পরিস্কার দেখা গেছে । এখন সব জায়গায় তৃণমূলের প্রধান পতিপক্ষ হল বিজেপি ।  বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ এবারে দ্বিগুণের থেকে বেশি । বাংলার মিডিয়াতে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল যে বিজেপি কি বাংলায় তৃণমূলে ফাটল ধরাতে পারবে ? শাসক দল যে ৪২ সে ৪২ টি আসনের কথা বলে ছিল তা আর পূরণ করা হলনা । উত্তরে বিজেপির জয় জয়োকার । ঘাসফুল রাজ্যের উত্তরে প্রায় শূন্য হয়ে গেল । আবার এদিকে কানা ঘুষো হচ্ছে যে – তৃণমূলের যে বিধায়করা বিজেপিইর সাথে যোগাযোগ রেখেছেন তারা কি বিধান সভা ভোটের আগে দলে যোগ দেবেন ? রাজ্যে যে বিধান সভার উপনির্বাচন ছিল সেখানেও তৃণমূলের খারাপ ফল । মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেছেন – ‘ বিজয়ীদের অভিনন্দন, সব পরাজিতরাই পরাজিত নন । পুরনাঙ্গ পর্যালোচনা করে আমাদের মতামত জানাব । আগে গননা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হোক এবং ভিভিপ্যাড মিলিয়ে দেখা হোক’ ২০২১ তে রাজ্যে বিধান সভার ভোট, তাতে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে লড়ার অক্সিজেন পেয়ে গেল । নিজেদের ক্ষমতা বাংলায় কিভাবে ধরে রাখবে এখন এটাই তৃণমূলের কাছে চিন্তার কারন । যে সিঙ্গুর আন্দোলনের জন্য ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল তৃণমূল, সেই সিঙ্গুরে শিল্পের দাবিতে মিছিল করলেন মানুষ । দল বিরোধী কথা বলার অভিযোগে তৃণমূল মুকুল রায়ের ছেলে শুভাংশু রায় কে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে । ২০২০ তে রাজ্যে পৌরসভার ভোট । তৃণমূলের হেভিওয়েত নেতা দীনেশ ত্রিবেদি হারলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অর্জুন সিং এর কাছে । কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মৌসম বেনজির নূর বিজেপির খগেন মুরমুর কাছে পরাজিত হলেন ।  এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসা অনেক জায়গায় দেখা গেছে । চাকদহে বিজেপি কর্মী খুনের অভিযোগে কিছুক্ষণ রেল অবরোধ করা হয় ।  গণ্ডগোল এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে রাজ্য পুলিস । কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক মনে করেন – পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন পরিচালনা বিহারের থেকেও শক্ত ।
বাংলার আসন – ৪২, তৃণমূল – ২৪, বিজেপি – ১৮, কংগ্রেস – ২ , বামফ্রন্ট – ০
  কেন্দ্র   ---     জয়ী  পার্থী   ---    দল
১) দার্জিলিং – রাজু সিং বিস্তা – বিজেপি
২) জলপাইগুড়ি – জয়ন্ত রায় – বিজেপি  
৩) কোচবিহার – নিশীথ প্রামানিক – বিজেপি  
৪) আলিপুরদুয়ার – জন বারলা – বিজেপি
৫) রায়গঞ্জ – দেবশ্রি চৌধুরী – বিজেপি
৬) বালুরঘাট – ডঃ সুকান্ত মজুমদার – বিজেপি  
৭) মালদহ উত্তর – খগেন মুরমু – বিজেপি
৮) মালদহ দক্ষিণ – আবু হাসেন খান চৌধুরী – কংগ্রেস  
৯) জঙ্গিপুর - খলিলুর রহমান - তৃণমূল কংগ্রেস
১০) মুর্শিদাবাদ - আবু তাহের খান - তৃণমূল কংগ্রেস
১১) বহরমপুর – অধির রঞ্জন চৌধুরি - কংগ্রেস
১২) কৃষ্ণনগর - মহুয়া মৈত্র - তৃণমূল কংগ্রেস
১৩) রানাঘাট – জগন্নাথ সরকার – বিজেপি
১৪) বর্ধমান পূর্ব - সুনীল মণ্ডল - তৃণমূল কংগ্রেস
১৫) বর্ধমান-দুর্গাপুর – এস.এস আলুয়ালিয়া - বিজেপি
১৬) আসানসোল – বাবুল সুপ্রিয় - বিজেপি
১৭) বোলপুর - অসিত মাল - তৃণমূল কংগ্রেস
১৮) বীরভূম - শতাব্দী রায় - তৃণমূল কংগ্রেস
১৯) বনগাঁ – শান্তনু ঠাকুর – বিজেপি
২০) ব্যারাকপুর – অর্জুন সিং  – বিজেপি
২১) হাওড়া - প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় - তৃণমূল কংগ্রেস
২২) উলুবেড়িয়া - সাজদা আহমেদ - তৃণমূল কংগ্রেস
২৩) শ্রীরামপুর - কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় - তৃণমূল কংগ্রেস
২৪) হুগলি – লকেট চ্যাটার্জি – বিজেপি
২৫) ঘাটাল - দীপক অধিকারী -  তৃণমূল কংগ্রেস
২৬) আরামবাগ - অপরূপা পোদ্দার - তৃণমূল কংগ্রেস
২৭) তমলুক - দিব্যেন্দু অধিকারী - তৃণমূল কংগ্রেস
২৮) কাঁথি - শিশির অধিকারী - তৃণমূল কংগ্রেস
২৯) ঝাড়গ্রাম – কুয়ার হেমব্রম – বিজেপি
৩০) মেদিনীপুর – দীলিপ ঘোষ – বিজেপি
৩১) পুরুলিয়া – জ্যোতির্ময় মাহাত – বিজেপি  
৩২) বাঁকুড়া – সুভাষ সরকার - বিজেপি
৩৩) বিষ্ণুপুর – সৌমিত্র খাঁ – বিজেপি
৩৪) দমদম  - সৌগত রায় - তৃণমূল কংগ্রেস
৩৫) বারাসত  - কাকলি ঘোষ দস্তিদার - তৃণমূল কংগ্রেস
৩৬) বসিরহাট - নুরসরত জাহান - তৃণমূল কংগ্রেস
৩৭) জয়নগর - প্রতিমা মণ্ডল - তৃণমূল কংগ্রেস
৩৮) মথুরাপুর  - চৌধুরী মোহন জাটুয়া - তৃণমূল কংগ্রেস
৩৯) ডায়মন্ডহারবার - অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় - তৃণমূল কংগ্রেস
৪০) যাদবপুর - মিমি চক্রবর্তী - তৃণমূল কংগ্রেস
৪১) কলকাতা দক্ষিণ - মালা রায় - তৃণমূল কংগ্রেস
৪২) কলকাতা উত্তর - সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় - তৃণমূল কংগ্রেস


 আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । খবর বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে আপনার বাম পাশে সময় লেখাটির উপর ক্লিক করুন । ধন্যবাদ ।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷