শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০

সর্দি ভাল করার বিভিন্ন উপায় কি কি ?.


এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যার জীবনে কখনো সর্দি হয়নি । সর্দি হল আমাদের অতি পরিচিত একটি অসুখ । মানুষ যেসকল রোগে সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয় সর্দির ভাইরাস এর মধ্যে প্রথম  ৮০'র দশকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয় যে মোট সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি জ্বর হয়ে থাকে  আচমকা তাপমাত্রার হেরফের হলেই সর্দি-কাশির একটা সমস্যায় ভুগতে আরম্ভ করেন অনেকেই ৷ ঋতু পরিবর্তনের সময়েই বেশিরভাগ মানুষ সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগেন  শীতের তীব্রতায় আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে মানব শরীরে বিভিন্ন ধরণের ঠাণ্ডা জনিত অসুখ সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে  বিশেষ করে যাদের রয়েছে এলার্জির সমস্যা, তারা বিপদে পড়েন সবচেয়ে বেশি । শীতকাল আসলে এর প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পায় 


 গরমে ঘামার পর সেই ঘাম শরীরেই শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে । আর শরীরে বসে যাওয়া এই ঠাণ্ডা থেকেই সর্দির উৎপত্তি । আমাদের শরীর যখন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মিউকাস তৈরি করে, তখনই বাড়তি মিউকাস নাকের দিক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে । গলা ব্যথা, নাক বন্ধ থাকা, নাক দিয়ে জল পড়া, জ্বরক্ষেত্র বিশেষে মাথা ব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, খাবারে রুচি কমে যাওয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে  আমরা কিছু কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে অতি সহজে সর্দি থেকে রক্ষা পেতে পারি 
১) দুধ আর কাঁচা হলুদ বেশ করে ফুটিয়ে পান করুন, শরীরের ভিতরের সব ইনফেকশন কমাতে তা কার্যকর ৷ আদা আর মধু দিয়ে চা খেতে পারেন  সর্দির সময় উষ্ণ পরিবেশে থাকা বা উষ্ণ পোশাক পরে থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়  দিনে দু’বার স্টিম নেওয়ার পাশাপাশি অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খেলে সাধারণত এই সমস্যা কমে যায়  ঠাণ্ডা বা সর্দি জ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই সর্দি জ্বর আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি অন্যের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারেন 
২) এই সময় হাঁচি, কাশি এবং ঘাম হতে থাকে স্বাভাবিক সময়ের চাইতে বেশি  আর এতে করে শরীর কিছুটা জল শূন্য হয়ে যায় ।  ডাক্তাররা তখন প্রচুর পানীয় পানের সুপারিশ করেন, গরম জলে লেবুর রস ও মধুর মিশ্রণকিছু পরিমাণ চা বা কফি খেতে পারেন  শরীরে জীবাণু আক্রান্ত হওয়ার জন্য যে জল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল তাও পূরণ হবে  লেবু এবং মধু দিয়ে হালকা গরম পানীয় তৈরি করে পান করলে গলা ব্যথা দ্রুত উপশম হতে পারে  তবে, মাত্রাতিরিক্ত কখনোই নয়  সর্দি কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচি থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরে অবস্থান করুন 
৩) ভিটামিন সি ঠাণ্ডা জনিত রোগ উপশমে অনেক বেশি কার্যকর  সর্দির থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি'র ভূমিকা অনেক আগে থেকেই প্রমাণিত হয়েছে  ঠাণ্ডা পরিবেশে বসবাসকারী মানুষ উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি গ্রহণ করে সর্দি জ্বর বা ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে পারেন বলে প্রমাণিত হয়েছে  সুতরাং সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই ভালো  আবার ভিটামিন ডির অভাব হয় যাদের , তাদের সর্দি-কাশিতে কাবু করে বেশি  অনেক সময় শুধু খাবার থেকে যথেষ্ট ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না । তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত  সপ্তাহে দুই দিন কেউ যদি অন্তত ৫ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যালোক গায়ে মাখে, তবে তা যথেষ্ট  সূর্যের আলো বা অন্য কোনো উৎসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি গ্রহণও শরীরকে ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে 
৪) ৫ থেকে ৬ কোয়া রসুন থেঁতো করে নিন । তারপর সেটা শুধু খেতে পারেন কিংবা স্যুপের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন  এক কাপ আদার রসে মধু মিশিয়ে খান । সঙ্গে সঙ্গেই ফল পাবেন  এক চামচ দারুচিনির গুঁড়ো মধুর সঙ্গে মিশিয়ে তিন দিন দুই থেকে তিন বার করে খান  স্মার্ট ফোনের পর্দায় থাকা জীবাণু ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হতে পারে । এসব জীবাণু থেকে সর্দি-কাশি হতে পারে । তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন 
৫) তুলসী গাছের পাতা ট্যাবলেট কিংবা ক্যাপসুলের চেয়ে বেশি কার্যকর  ৮ থেকে ১০টি তুলসী পাতা ভালো করে জলে ধুয়ে ফোটানো জল এক কাপ করে রোজ খান  আঙ্গুল দিয়ে ঘন ঘন নাক অথবা চোখ খুঁটবেন না  ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । চমৎকার একটি ঘুম শরীরের রোগপ্রতিরোধ কোষ গুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে  কাজেই ঠাণ্ডা বা সর্দির সময় বিশ্রাম নিলে বা বেশি ঘুমলে দ্রুত আরোগ্য লাভ সম্ভব  আবার শুধু বিছানায় শুয়ে না থেকে হাঁটাহাঁটি বা মৃদু ব্যায়াম করুন  সপ্তাহে তিনবার মুক্ত বাতাসে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাইকেল চালানো কিংবা নাচ করতে পারেন । ঠাণ্ডায় আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে তোয়ালে বা গৃহস্থালির দ্রব্যাদি শেয়ার না করা ভাল । ঠাণ্ডা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর নিজের চোখ বা নাক স্পর্শ না করা । এতে হাত থেকে সহজেই ভাইরাস যেতে পারে । সেখান থেকে মুখে বা শরীরে ভাইরাস যাওয়া অসম্ভব কিছু নয় 
৬) শরীরে জিংকের ঘাটতি হলে ভাইরাসের বৃদ্ধি দ্রুত হয় । তাই শরীরে জিংকের ঘাটতি হতে দেবেন না । চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জিংক ট্যাবলেট খেতে পারেন  প্রতিদিন আমাদের শরীরের জন্য ১৫ মিলিগ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়  স্বল্প চর্বিযুক্ত মুরগির স্যুপ খান  এই স্যুপে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ  এটি উপসর্গ নিরসনে সাহায্য করে । অ্যালকোহল পরিহার করুন । অনেকেই ভাবতে পারেন, অ্যালকোহল পান করলে ঠাণ্ডার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়, কিন্তু সেটা ঠিক নয় ।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে বা আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্ট টি পৌঁছেদিতে অনুগ্রহ করে শেয়ার করুণ । স্বাস্থ্য বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য লেখাটির উপর ক্লিক করুণ । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Flipkart.com

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷