রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০

করোনা ভাইরাস কি, এর প্রতিরোধের উপায় কি ?.


 চীন জুড়ে ছড়িয়ে পড়া রহস্যময় করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে । চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে গত ডিসেম্বরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়এরপর তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে । করোনা ভাইরাস হল এমন একটি শ্রেণীভুক্ত ভাইরাস যারা  স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদের আক্রান্ত করে করোনাভাইরাস শব্দটি ল্যাটিন করোনা থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ মুকুট এর অঙ্গসংস্থান ভাইরাল স্পাইক পেপলোমারে দ্বারা তৈরি হয়েছে যেগুলো মূলত ভাইরাসের পৃষ্ঠে অবস্থিত প্রোটিন । ধারনা করা হয়, প্রাণীর দেহ থেকে এই ভাইরাস প্রথম মানবদেহে প্রবেশ করে এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ভাইরাসের ফলে শ্বাসকষ্টের গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয় । 

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক লক্ষণ –
 জ্বর, অবসাদ, শুষ্ক কাশি, বমি হওয়া, শ্বাস কষ্ট, গলা ব্যথা, অঙ্গ বিকল হওয়া, মাথা ব্যথা, পেটের সমস্যা, কিছু রোগীর ক্ষেত্রে উপরোক্ত সকল উপসর্গ দেখা গেলেও জ্বর থাকেনা শুষ্ক কাশি ও জ্বরের মাধ্যমেই শুরু হয় উপসর্গ শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয় সাধারণত রোগের উপসর্গ গুলো প্রকাশ পেতে গড়ে পাঁচদিন সময় নেয় বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের কোনও ধরণের অসুস্থতা রয়েছে তাদের মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়

 করোনা ভাইরাস কতটা প্রাণঘাতী বা মারাত্মকতা আসলে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি । হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে সৃষ্ট জল কণার ফলে আক্রান্তর সংস্পর্শে অপর ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে ২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনে নোভেল করোনাভাইরাসএর দেখা পাওয়া যায় করোনা ভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রজাতি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ভাইরাসের ফলে শ্বাসকষ্টের গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে তো বটেইহাঁচি-কাশি থেকে বাতাসের মাধ্যমেও এ ভাইরাস ছড়াতে পারে ।

 করোনা ভাইরাস ভাইরাসের একটি পরিবারের সদস্যযা শ্বাসযন্ত্রের প্রক্রিয়ায় সংক্রমণ ঘটায় । বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই মারণ ভাইরাস ক্ষতির সম্ভাবনার দিক থেকে করোনাভাইরাস বেশ বৈচিত্র্যময় । এই রোগে নারীদের চেয়ে পুরুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা সামান্য বেশি । আজ ২৩/০৩/২০২০ পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় আক্রান্ত ৩ লক্ষ ও মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার জন । ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে বৈশ্বিক বাজারে ভ্রমণ ও বাণিজ্যিকভাবে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ।


 করোনাভাইরাস ১৯৬০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয় সাধারণ সর্দি-হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এরকম দুই ধরনের ভাইরাস পাওয়া যায় মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি মনুষ্য করোনাভাইরাস ২২৯ইএবং মনুষ্য করোনাভাইরাস ওসি৪৩নামে নামকরণ করা হয় এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য রোগটিকে এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছে সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রজাতিটি এসএআরএস-সিওভিপ্রজাতির সাথে ৭০% জিনগত মিল পাওয়া যায় করোনা ভাইরাসে  মাত্র 2 থেকে 3 শতাংশ মানুষের প্রাণহানির তথ্য রয়েছে এমনটা নয় যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই সেই রোগীর মৃত্যু হবে ।

 ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয় অনেক সময়ই কোন একটি প্রাণী থেকে এসে নতুন নতুন ভাইরাস মানব শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা সাম্প্রতিক ভাইরাসটির উৎস কোনও প্রাণী । অনেকেই অনুমান করছেন নতুন এ প্রজাতিটি সাপ থেকে এসেছে যদিও অনেক গবেষক এ মতের বিরোধিতা করেন গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুরের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে ।


 করোনা নিয়ে রাজ্যের এবং দেশের বহু মানুষ আজও আতঙ্কিত । রাজ্য ও  কেন্দ্রের তরফে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বারবার বলা হলেও করোনা আতঙ্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না  করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই । এমনটা নয় যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই সেই রোগীর মৃত্যু হবে । এখন পর্যন্ত ২০১৯-এনসিওভি ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি । বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে এবং কীভাবে ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায় । ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটির বিস্তার সীমাবদ্ধ করতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে । অসুস্থ মানুষদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন ।

 সংক্রমণ ঠেকাতে কলকাতা বিমানবন্দর সহ গোটা দেশের বিমানবন্দরগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ইতিমধ্যেই হেলথ স্ক্রিনিং ক্যাম্প চালু করা হয়েছে এই রোগ থেকে এখন পর্যন্ত রক্ষার একমাত্র উপায় হল অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন বিদেশ ফেরত যাত্রীরা হোম কোয়ারেন্টিন, সেল্ফ কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনের নিয়মকানুন মেনে চলেন । রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন লক্ষণ ছাড়া ব্যক্তিরাও ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারেন এর ফলে ভাইরাসটি সংক্রমণ ঠেকানো আরও কঠিন হয়ে পড়বে


 আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে বা আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্ট টি পৌঁছেদিতে অনুগ্রহ করে শেয়ার করুণ । স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও খবর বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও সময় লেখাটির উপর ক্লিক করুণ । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ    

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

1 টি মন্তব্য:

  1. করোনা জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আপনার লেখাটি এক্ষেত্রে অনেক উপকারে আসবে। আর একটা কথা একের ভিতর সব অর্থাৎ All Bangla Tips এক সাথে একটা ব্লগে প্রকাশ করছেন। এটা অনেক ভালো এবং আমার খুব ভালো লেগেছে।

    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷