রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০

আমাদের পৃথিবীর মত কি আরও পৃথিবী আছে ?.


 আকাশের বুক হাজারো লক্ষ কোটি গ্রহ, নীহারিকা আর গ্রহাণুপুঞ্জ নিয়ে তৈরি । সুপ্রাচীন কাল থেকই আমরা জেনে এসেছি যে, আমাদের পৃথিবী ব্রহ্মাণ্ডের একমাত্র স্থান যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিন্তু, এই যে আমাদের এত পরিচিত বিশাল মহাবিশ্ব, এর বাইরেও এমনি ধরনের অসংখ্য মহাবিশ্ব ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রাচীন দার্শনিক  জিওর্দানো ব্রুনো  বলেছিলেন -  পৃথিবী সৌরজগতের কেন্দ্র নয়, এমনকি এই মহাবিশ্বের সংখ্যাও একটি নয়, বরং এর সংখ্যা হতে পারে অনন্ত অসীম । এই মহাবিশ্বের অন্যান্য গ্রহেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব । সেরকম প্রাণ ওয়ালা একাধিক গ্রহ থাকতে পারে অন্য মহাবিশ্বেও । মাল্টিভার্স তত্ত্বের মধ্যে এই স্বতন্ত্র মহাবিশ্বকে সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা প্যারালাল ইউনিভার্স বলা হয়  তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই  মাল্টিভার্স বা অনন্ত মহাবিশ্বের ধারণাটি আসলে কি ?  

 অসংখ্য মহাবিশ্বের ভিড়ে আমাদের মহাবিশ্বও একটি । বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মনে করেন অনন্ত অসীম এই ব্রহ্মাণ্ডে এমন অনেক গ্রহ থাকতে পারে যেখানে জীবন আছে । আর এই একমাত্র কারণে আমাদের পৃথিবীর মত গ্রহ খোঁজার প্রচেষ্টা দিন দিন বেড়েই চলেছে আমাদের এই ব্রহ্মাণ্ডে শুধু পৃথিবীর মতো নয় হুবহু পৃথিবীর প্রতিরূপ আছে । যেখানে এরকমই শহর, এরকমই সমুদ্র, এরকম সব পশু পাখি, এমনকি আপনারও প্রতিরূপও আছে আমাদের শুধুমাত্র একটি ব্রহ্মাণ্ড নয় এরকম অনেক সমান্তরাল মহাবিশ্ব আছেযেমন আপনি বর্তমানে বই পড়ছেন সমান্তরালভাবে আপনি হয়তো বইটি পড়ে নিয়েছেন । আবার অন্য কোনও সমান্তরাল মহাবিশ্ব আপনি হয়তো এই বইটি সম্পর্কে কিছুই জানেন না অথবা কোনও সমান্তর মহাবিশ্বে এমনটাও তো হতে পারে আপনি এখনও জন্মই হয় নি এ ধরনের অসংখ্য মহাবিশ্বের একটিতেই হয়ত আমরা অবস্থান করছি অন্য গুলোর অস্তিত্ব সম্বন্ধে একেবারেই জ্ঞাত না হয়ে

 সমমান্তরাল মহাবিশ্বের কথা শুনতে হয়ত অনেকের কাছে আজগুবি মনে হতে পারে । মাল্টিভার্সের ধারণা বিজ্ঞানীরা হাজির করার পর থেকেই একে বিভিন্ন সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাহলে এটা কি শুধুমাত্র বিজ্ঞানীদের একটি পরিকল্পনা বা ধারণা । নাকি তার মধ্যে বৈজ্ঞানিক কোনও যুক্তি প্রমাণ আছে বিজ্ঞানীরা গাণিতিক সম্ভাবনার সাহায্যে হিসেব কষে দেখেছেন যে - এই অসীম মহাবিশ্বে আমাদের সৌরজগতের প্রতিরূপ খুঁজে পাবার সম্ভাবনা বেশ প্রবল । আমাদের সৌর জগতের বাইরেও একাধিক সৌর জগত রয়েছে । এভাবে একাধিক সৌরজগতের সমন্বয়ে সৃষ্টি গ্যালাক্সি  
  সমস্ত মহাবিশ্ব এরকম আরও অনেক গ্যালাক্সি রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব আমরা এখনো জানিনা মনে করা হয় এই সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ড আমাদের দুনিয়াতেই মজুত আছে আমদের জগতের পাশাপাশি সমান্তরাল জগতগুলি অবস্থিত । কিন্তু আমরা এটাকে দেখতে পাই না এই মহাবিশ্ব ঠিক আমাদের মহাবিশ্বের মতো 'বিগ ব্যাং' থেকে সৃষ্টি হয়েছে । এক একটি বিগ-ব্যাং পরিশেষে জন্ম দিয়েছে এক একটি মহাবিশ্বের মহাবিশ্ব গুলোর প্রকৃতি কীরকম হবে তা নির্ভর কর তাঁর অন্তঃ স্থানের বক্রতার প্রকৃতির উপর পদার্থবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক তত্ত্বগুলোর কোনটাই অসংখ্য মহাবিশ্বের অস্তিত্বকে বাতিল করে দেয় না
  মহাবিশ্ব স্থানটি এত বড় যে কোনও না কোনও স্থানে ঠিক পৃথিবীর মতোই অন্য গ্রহ আছে । তাদের মধ্যে যা ঘটবে সেগুলি আমাদের পৃথিবীর মতোই হবে বা পৃথিবীতেও তার অনুরূপ ঘটনা ঘটবে । বিজ্ঞানীদের দ্বারা করা ক্যাল্কুলেশন এটাই বলে যে - এটা আমাদের থেকে অনেকটা দূরে হয়তো ওইখান থেকে আলো আমাদের কাছে কোনদিন এসে পৌঁছবে না সমান্তরাল মহাবিশ্ব এতদূরে যে কোনও বার্তা তাদের কাছ থেকে আমাদের কাছে বা আমাদের কাছ থেকে তাদের কাছে আসতে পারে না । যেখানে আমাদের গ্যালাক্সি, আমাদের সূর্য, আমাদের পৃথিবী এমনকি আমাদের নিজেদেরও প্রতিরূপ হতে পারে এর থেকে বোঝা যায় যদি এমনটা হয় তবে একের অধিক ব্রহ্মাণ্ড অবশ্যই হবে সমান্তরাল মহাবিশ্ব অন্যদের থেকে আলাদা, কারণ তারা আমাদের নিজস্ব মহাবিশ্বের মতো একই স্থান এবং সময়ে অবস্থান করে তবু  আপনার কাছে এখনও সেখানে পৌঁছানো বা প্রবেশের কোন উপায় নেই
 সমান্তরাল মহাবিশ্ব হল সবচে অদ্ভুত  স্থান ,কারণ এটি আমাদের মহাবিশ্বের তুলনায় প্রকৃতির ভিন্ন গাণিতিক আইন অনুসরণ করে । প্রতিটি ব্রহ্মাণ্ড আলাদা আলাদা, তাই তাদের ব্রহ্মাণ্ডের ভেতরের ভৌতিকের নিয়মও আলাদা আলাদা হবে এ রকম আলাদা আলাদা নিয়মের মহাবিশ্বগুলোর সবকিছুই আলাদা । আর এসব মিলে একটি বিশাল নদীতে ভাসছে যেটাকে বলা হয় হাইপার স্পেস । ব্রহ্মাণ্ডের এই স্থানটি অন্যস্থানের থেকে বেশ ঠাণ্ডা বিজ্ঞানীদের মতে যদি দুটি ব্রহ্মাণ্ড ছুঁয়ে যায় তাহলে একটি বিশাল শক্তি উৎপন্ন হবে এরকম সংঘর্ষ কিন্তু কোন নির্দিষ্ট একটি স্থানে হয় না, বরং আমাদের মহাবিশ্বের বাইরের শূন্যটায় এরকম সংঘর্ষ হয়েই চলেছে, ফলে সৃষ্টি হয়ে চলেছে অসংখ্য মহাবিশ্ব ।

  প্যারালাল ইউনিভার্সের তত্ত্ব বলছে যে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লক্ষ কোটি মহাবিশ্বের মধ্যে কোনটি আকার, আয়তন আর বৈশিষ্ট্যে একদম ঠিক আমাদের মহাবিশ্বের মতই হবে না, এমন তো কোন গ্যারান্টি নেই নে করা , আমাদের চারপাশে  ১০৫০০ টির মতো মহাবিশ্বের অস্তিত্ব রয়েছে, এবং প্রতিটির উপর কাজ করতে পারে ভিন্ন ভিন্ন  প্রাকৃতিক সূত্র বিজ্ঞানীরা এটা সত্য কিনা জানার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানের অগ্রগতি দেখে এটাই মনে হচ্ছে যে সমান্তরাল মহাবিশ্বের রহস্য আমরা খুব দ্রুত উন্মোচন করতে পারবো বর্তমান প্রযুক্তির ধরা ছোঁয়ার বাইরে হলেও, ভবিষ্যতে কোন দিন হয়ত আমরা এমন মহাবিশ্বের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হব ।
 আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে বা আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্ট টি পৌঁছেদিতে অনুগ্রহ করে শেয়ার করুণ । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুণ । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।   

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷