মহাকাশ অভিযানের নানা জানা অজানা কাহিনী কি ?.
আমাদের মাথার ওপরে রয়েছে আকাশ, তার ওপরে যে সীমাহীন, অনন্ত জায়গা রয়েছে তাকে
মহাকাশ বলে । পৃথিবীর মাটি থেকে ১ হাজার কিলোমিটার ওপরের এলাকাকে সাধারণ ভাবে
মহাকাশ বলা হয় । মহাকাশে মানুষের কত অজানা বস্তু রয়েছে । বিজ্ঞানীদের কত দিনের কত
পরিশ্রমের ফলে আমরা কিছুটা মহাকাশ সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তবুও জানার থেকে অজানা রয়েছে
অনেক বেশি । মহাকাশ সম্বন্ধে জানা এত সহজ নয় । বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন
আরও অনেক তথ্যের জন্য । এখন আমরা জানবো যে মহাকাশ অভিযানের নানা অজানা কাহিনী ।
কিভাবে মানুষ মহাকাশে অভিযান চালিয়েছেন ।
মহাকাশ
অভিযানের জন্য প্রথম দরকার মহাকাশযান । পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ছাড়িয়ে মহাকাশে
পৌঁছনের ক্ষমতা সবার নেই । একমাত্র রকেট হল বিজ্ঞানের সেই আবিষ্কার, যার
সাহায্যে মহাকাশে সহজে পাড়ি দেওয়া যায় । রকেটের জ্বালানি পুড়ে যে গ্যাস তৈরি হয়
তার প্রবল ধাক্কায় রকেট উপরের দিকে উঠে যায় । রকেটের সাহায্যে উপরে উঠার পর মহাকাশ
বিমান বা স্পেস সাঁটল ব্যবহার করা হয় । মহাকাশ যাত্রীরা হাওয়ায় ভরা এমন পোশাক পরেন
যে তাতে মহাকাশের কোন রশ্মি কোন ক্ষতি করতে পারে না ।
মহাকাশ
অভিযানের জন্য প্রথম সোভিয়েত রাশিয়া উল্লেখযোগ্য কাজ করে । প্রথম রাশিয়া মহাকাশ
অভিযান করে । সোভিয়েত রাশিয়া ১৯৫৭ সালে ৪ অক্টোবর ‘স্পুটনিক-১’ নামে
কৃত্রিম উপগ্রহ প্রথম মহাকাশে পাঠিয়েছিল । এর ওজন ছিল ১৮৪ পাউন্ড । এরপর ১৯৫৭
সালের নভেম্বরে আরও একটি মহাকাশযান ‘স্পুটনিক-২’ মহাকাশে
পাঠায় । সেই মহাকাশযানে ছিল লাইকা নামে এক প্রশিক্ষিত কুকুর । মহাকাশে তার মৃত্যু
হয় । প্রথমে মানুষ মহাকাশে পাড়ি দিত না, কারণ
ফিরে আসতে পাড়বে কিনা তার কোন কথা ছিল না ।
মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম মহাকাশ অভিযান করে ১৯৫৯ সালে । প্রথম তারা ৩১ জানুয়ারি ১৯৫৯
সালে ‘আলফা-১৯৫৯’ নামে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল । সোভিয়েত রাশিয়া ১৯৫৯ সালে ‘লুসকি-১’ নামে
একটি মহাকাশযান সর্ব প্রথম চাঁদের দিকে পাঠান । প্রথম মহাকাশযাত্রী ছিলেন পুরুষদের
মধ্যে ১৯৬১ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার ইউরি গ্যাগরিন । মহিলা যাত্রী ছিলেন ১৯৬৩ সালের
সোভিয়েত রাশিয়ার ভ্যালেন্টিনা তেরেসকোভা । প্রথম মার্কিন মহাকাশযাত্রী ছিলেন
অ্যালেন শেফার্ড । প্রথম মানুষ চাঁদের বুকে পা রাখেন ১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই, নীল
আর্মস্ট্রং ও এডউইন অলড্রিন । যে মহাকাশ যানের সাহায্যে তাঁরা চাঁদে নামেন তার নাম
অ্যাপোলো-১১ । মাইকেল কলিনস মহাকাশ যানের মধ্যে ছিলেন ।
১৯৯৭
সালে ৪ জুলাই ‘পাথফাইন্ডার’ নামে মহাকাশযান প্রথম মঙ্গল গ্রহের পাঠানো হয় । ২০১২ সালে কিউরোসিটি
রোভার মঙ্গলে অবতরণ করে । মঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া, জল, প্রাণের
অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করার জন্য NASA এই
যন্ত্রটি মঙ্গলে পাঠান ।
মহাকাশের বুকে প্রথম ভেসে বেড়ান সোভিয়েত রাশিয়ার আলোবিত্র লিওনব । প্রথম চাঁদের বুকে মোটর গাড়িতে ভ্রমণ করেন ডেভিড স্কট ও জেমস আরউইন । ১৯৭১ সালে ১৯ এপ্রিল রাশিয়া মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করেন ।
ভারত
এখন আর মহাকাশ অভিযানে পিছিয়ে নেই । ভারত ১৯৭৫ সালে ১৯ এপ্রিল সোভিয়েত রাশিয়ার
সাহায্যে আর্যভট্ট নামে
প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় । ভারত নিজে ১৯৮০ সালের ১৮ জুলাই ‘রোহিণী’ নামে
একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় । ২০০৮ সালে ভারত চাঁদের উদ্দেশ্যে যে
মহাকাশযান পাঠায় তার নাম চন্দ্রযান-১ । এছাড়া ভারত ভাস্কর-১, ভাস্কর-২, Insat ইত্যাদি
কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছেন । ভারতের প্রথম মাহাকাশচারি ছিলেন রাকেশ শর্মা ।
তিনি ১৯৮৪ সালে ৩ এপ্রিল মহাকাশে পাড়ি দেন । কল্পনা চাওলা হলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা
যিনি কলম্বিয়া ‘নামক’ মার্কিন মহাকাশযানে পাড়ি দিয়ে ছিলেন । দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় ।
সুনীতা উইলিয়াম হলেন ভারতীয় দ্বিতীয় মহিলা যিনি মহাকাশে সবথেকে বেশি দিন কাটিয়েছেন
। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের নাম ISRO । এটি ১৯৬৯ সালে স্থাপন
করা হয় । কর্ণাটক, কেরলের থুম্বা, অন্ধ্রপ্রদেশের
শ্রীহরি কোটায় ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র আছে ।
কৃত্রিম
উপগ্রহ হল মানুষের তৈরি যন্ত্র, যা পৃথিবীর চারিদিকে
ঘোরে । আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সামুদ্রিক পরিবহন ও
মহাকাশ গবেষণার জন্য এগুলি কাজে লাগানো হয় । রকেটের সাহায্যে এগুলি মহাকাশে পাঠানো
হয় । বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে এদের কাজে অসুবিধা দেখা যায় ।
আমাদের
লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান ।
আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । বিজ্ঞান ও জানা
অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে বিজ্ঞান ও জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো
পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷