শনিবার, ২২ জুন, ২০১৯

মহাকাশ অভিযানের নানা জানা অজানা কাহিনী কি ?.


   আমাদের মাথার ওপরে রয়েছে আকাশ, তার ওপরে যে সীমাহীন, অনন্ত জায়গা রয়েছে তাকে মহাকাশ বলে । পৃথিবীর মাটি থেকে ১ হাজার কিলোমিটার ওপরের এলাকাকে সাধারণ ভাবে মহাকাশ বলা হয় । মহাকাশে মানুষের কত অজানা বস্তু রয়েছে । বিজ্ঞানীদের কত দিনের কত পরিশ্রমের ফলে আমরা কিছুটা মহাকাশ সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তবুও জানার থেকে অজানা রয়েছে অনেক বেশি । মহাকাশ সম্বন্ধে জানা এত সহজ নয় । বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আরও অনেক তথ্যের জন্য । এখন আমরা জানবো যে মহাকাশ অভিযানের নানা অজানা কাহিনী । কিভাবে মানুষ মহাকাশে অভিযান চালিয়েছেন ।

    মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রথম দরকার মহাকাশযান । পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ছাড়িয়ে মহাকাশে পৌঁছনের ক্ষমতা সবার নেই । একমাত্র রকেট হল বিজ্ঞানের সেই আবিষ্কার, যার সাহায্যে মহাকাশে সহজে পাড়ি দেওয়া যায় । রকেটের জ্বালানি পুড়ে যে গ্যাস তৈরি হয় তার প্রবল ধাক্কায় রকেট উপরের দিকে উঠে যায় । রকেটের সাহায্যে উপরে উঠার পর মহাকাশ বিমান বা স্পেস সাঁটল ব্যবহার করা হয় । মহাকাশ যাত্রীরা হাওয়ায় ভরা এমন পোশাক পরেন যে তাতে মহাকাশের কোন রশ্মি কোন ক্ষতি করতে পারে না ।


 মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রথম সোভিয়েত রাশিয়া উল্লেখযোগ্য কাজ করে । প্রথম রাশিয়া মহাকাশ অভিযান করে । সোভিয়েত রাশিয়া ১৯৫৭ সালে ৪ অক্টোবর স্পুটনিক-১নামে কৃত্রিম উপগ্রহ প্রথম মহাকাশে পাঠিয়েছিল । এর ওজন ছিল ১৮৪ পাউন্ড  এরপর ১৯৫৭ সালের নভেম্বরে আরও একটি মহাকাশযান স্পুটনিক-২’ মহাকাশে পাঠায় । সেই মহাকাশযানে ছিল লাইকা নামে এক প্রশিক্ষিত কুকুর । মহাকাশে তার মৃত্যু হয় । প্রথমে মানুষ মহাকাশে পাড়ি দিত না, কারণ ফিরে আসতে পাড়বে কিনা তার কোন কথা ছিল না ।

   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম মহাকাশ অভিযান করে ১৯৫৯ সালে । প্রথম তারা ৩১ জানুয়ারি ১৯৫৯ সালে আলফা-১৯৫৯নামে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল । সোভিয়েত রাশিয়া ১৯৫৯ সালে লুসকি-১নামে একটি মহাকাশযান সর্ব প্রথম চাঁদের দিকে পাঠান । প্রথম মহাকাশযাত্রী ছিলেন পুরুষদের মধ্যে ১৯৬১ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার ইউরি গ্যাগরিন । মহিলা যাত্রী ছিলেন ১৯৬৩ সালের সোভিয়েত রাশিয়ার ভ্যালেন্টিনা তেরেসকোভা । প্রথম মার্কিন মহাকাশযাত্রী ছিলেন অ্যালেন শেফার্ড । প্রথম মানুষ চাঁদের বুকে পা রাখেন ১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই, নীল আর্মস্ট্রং ও এডউইন অলড্রিন । যে মহাকাশ যানের সাহায্যে তাঁরা চাঁদে নামেন তার নাম অ্যাপোলো-১১ । মাইকেল কলিনস মহাকাশ যানের মধ্যে ছিলেন ।

  ১৯৯৭ সালে ৪ জুলাই পাথফাইন্ডারনামে মহাকাশযান প্রথম মঙ্গল গ্রহের পাঠানো হয় । ২০১২ সালে কিউরোসিটি রোভার মঙ্গলে অবতরণ করে । মঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া, জল, প্রাণের অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করার জন্য NASA  এই যন্ত্রটি মঙ্গলে পাঠান ।


 মহাকাশের বুকে প্রথম ভেসে বেড়ান সোভিয়েত রাশিয়ার আলোবিত্র লিওনব । প্রথম চাঁদের বুকে মোটর গাড়িতে ভ্রমণ করেন ডেভিড স্কট ও জেমস আরউইন । ১৯৭১ সালে ১৯ এপ্রিল রাশিয়া মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করেন ।

  ভারত এখন আর মহাকাশ অভিযানে পিছিয়ে নেই । ভারত ১৯৭৫ সালে ১৯ এপ্রিল সোভিয়েত রাশিয়ার সাহায্যে  আর্যভট্ট  নামে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় । ভারত নিজে ১৯৮০ সালের ১৮ জুলাই রোহিণীনামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায় । ২০০৮ সালে ভারত চাঁদের উদ্দেশ্যে যে মহাকাশযান পাঠায় তার নাম চন্দ্রযান-১ । এছাড়া ভারত ভাস্কর-১, ভাস্কর-২Insat ইত্যাদি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছেন । ভারতের প্রথম মাহাকাশচারি ছিলেন রাকেশ শর্মা । তিনি ১৯৮৪ সালে ৩ এপ্রিল মহাকাশে পাড়ি দেন । কল্পনা চাওলা হলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি কলম্বিয়া নামকমার্কিন মহাকাশযানে পাড়ি দিয়ে ছিলেন । দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় । সুনীতা উইলিয়াম হলেন ভারতীয় দ্বিতীয় মহিলা যিনি মহাকাশে সবথেকে বেশি দিন কাটিয়েছেন । ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের নাম ISRO  এটি ১৯৬৯ সালে স্থাপন করা হয় । কর্ণাটক, কেরলের থুম্বা, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরি কোটায় ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র আছে ।

   কৃত্রিম উপগ্রহ হল মানুষের তৈরি যন্ত্র, যা পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে । আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সামুদ্রিক পরিবহন ও মহাকাশ গবেষণার জন্য এগুলি কাজে লাগানো হয় । রকেটের সাহায্যে এগুলি মহাকাশে পাঠানো হয় । বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে এদের কাজে অসুবিধা দেখা যায় ।


   আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । বিজ্ঞান ও জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে বিজ্ঞান ও জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷