বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৯

ভারতের জাতীয় পতাকার অজানা কাহিনী কি ?.


 পৃথিবীর প্রত্যেক স্বাধীন দেশের একটা করে জাতীয় পতাকা থাকে। সকল জাতির জন্য পতাকা গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পতাকা সেই দেশের বা সমগ্র জাতির প্রতীকমর্যাদাআদর্শের প্রতীক বলে মনে করা হয়। পৃথিবীর প্রতিটি স্বাধীন দেশের একটি করে জাতীয় পতাকা আছে। মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় পতাকা সম্মান রক্ষা করা প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য ।
  পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মত ভারতে একটি জাতীয় পতাকা রয়েছে। পতাকাটি আয়তক্ষেত্রাকার। প্রস্থ হয় এর দেড় গুন। পতাকায় তিনটি রং থাকেতিনটি রঙের জায়গা সমান। তাই একে তিরঙা বলে। সবার উপরে থাকে গেরুয়ামাঝে সাদাসবার নিচে থাকে সবুজ। তিনটি রঙের একটি করে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। উপরের গেরুয়া ত্যাগমাঝের সাদা শান্তি ও পবিত্রতারনীচের সবুজ নির্ভীকতাজীবনধর্মতারুণ্যের প্রতীক। পতাকার মাঝে সাদা অংশে একটি চক্র রয়েছে। চক্রটি সম্রাট অশোকের ধর্ম চক্রের অনুকরণে তৈরি। তাকে আশক চক্র বলা হয়। চক্রটিতে ২৪ টি স্পোক বা কাটা আছে। ২৪ টি কাটা ২৪ টি অর্থ বহন করে ।


 ভালবাসাসাহসশান্তিমহানুভবতাউদারতাবিশ্বাসআন্তরিকতাকরুণাকমনীয়তা ইত্যাদি। চক্রটিকে দেশের উন্নতির ও প্রগতির প্রতীক বলা হয়।

   ভারতে প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন বাহাদুর শা জাফর। ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি এই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। পতাকাটি ছিল সবুজ রঙের। তার উপরে ছিল সোনালি রঙের পদ্ম ও হাতরুটি।

   এরপর ভগিনী নিবেদিতা ১৯০৫ সালে লাল রঙের উপর পতাকা নক্সা তৈরি করেছিলেন। পতাকার চারিধারে ১০৮ টি শিখা ছিল। মাঝখানে ছিল হলুদ রঙের বজ্র। বজ্রের বামদিকে বাংলাতে লেখা ছিল ‘বন্দে’ আর ডানদিকে লেখা ছিল ‘মাতরম


   এরপর ১৯০৭ সালে মাডাম ভিকাজি রুস্তম কামা বিদেশের মাটিতে প্রথম ভারতের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।

   ১৯১৭ সালে শ্রীমতী অ্যানি বেসান্ত এবং বাল গঙ্গাধর তিলক একটি নতুন পতাকার কথা ভেবেছিলেন।

   গান্ধীজী ১৯২১ সালে প্রথম তাঁর পতাকা নিয়ে আসেন। পতাকাটির উপর দিক থেকে তিনটি রঙ আড়াআড়ি ভাবে তিনটি সমান ভাগে ভাগ করা ছিল। রঙ গুলি ছিল সাদাসবুজলাল। এর মাঝখানে রেখা আঁকা ছিল।


  এরপর ১৯৪৭ সালের ৩ জুন ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করেন যে ১৫ আগস্ট ভারতকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করা হবে। তখন স্বাধীন ভারতের পতাকা তৈরির জন্য গণ পরিষদ একটি আস্থায়ী কমিটি তৈরি করেন। ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই ভারতের জাতীয় পতাকা তৈরি হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট মধ্য রাত্রে গণ পরিষদের হাতে জাতির উদ্দেশ্যে পতাকাটি তুলে দেয়া হয়।

      ব্যবহার বিধি – পৃথিবীর প্রত্যেক স্বাধীন রাষ্ট্র জাতীয় পতাকা ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন নিয়ম শৃঙ্খলা পালন করে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় যথেষ্ট মর্যাদার সঙ্গে স্থাপন করতে হবে। পাশে যদি অন্য কোন পতাকা থাকে তবেজাতীয় পতাকার উচ্চতা তার থেকে বেশি হবে। জাতীয় পতাকার দণ্ডটিতে অন্য কোন পতাকা রাখা যাবেনা। জাতীয় শোক প্রকাশ করতে বা কোন বিশেষ ব্যক্তিররাষ্ট্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সময় জাতীয় পতাকা অর্ধ-নমিত রাখা হয়। সরকারি ভবন গুলিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন কারা হলে রবিবার ও ছুটির দিন সমেত সব দিন গুলিতে থাকবে। গেরুয়া রঙটি সব সময় উপরে থাকবে। বাজনার তালে তালে জাতীয় পতাকা ওঠানো ও নামানো করতে হয়। স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা সবাই ব্যবহার করতে পারেন।


   জাতীয় পতাকা ছেঁড়াফাটাবিবর্ণ হলে ব্যবহার করা যাবেনা। জাতীয় পতাকার ডানদিকে বা বেশি উচ্চতায় অন্য কোন পতাকা রাখা যাবেনা কফিনে ঢাকা জাতীয় পতাকা মৃতদেহের সঙ্গে চিতায় বা কবরে দেয়া যাবেনা। কোন মিছিলে জাতীয় পতাকা নিয়ে যাওয়ার সময় মিছিলে সবার আগে যোগ্য মানুষের ডান কাঁধে নিয়ে যেতে হয়। কোনো ব্যবসার কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া জাতীয় পতাকা ব্যবহার আইন অনুসারে অন্যায় কাজ। জাতীয় পতাকাকে সম্মান দেখানোর আসল পথ হল এর ব্যবহার প্রণালি শেখা ও সেগুলি সঠিক নিয়মে পালন করা।

  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷