মৃত সাগর কি, মৃত সাগর কোথায় আছে ?.
আমরা
সবাই বিশ্বাস করি মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর স্থান হয় স্বর্গে বা নরকে । কিন্তু
মৃত্যুর সাগর সেটা আবার কি ? নামটা নিশ্চয়ই
অদ্ভুত ঠেকছে আপনার কাছে । জর্ডন ও সিরিয়ার মাঝখানে রয়েছে এই সাগর । প্রকৃতির অনন্য বিস্ময়কর সৃষ্টি এই মৃত সাগর । পৃথিবীর বুকে যে সমস্ত
লবণাক্ত সাগর গুলি রয়েছে তাদের মধ্যে সবথেকে লবণাক্ত সাগর হল এটি । সাগর বলা হলেও
এটি আসলে একটি হ্রদ । এর দৈর্ঘ্য হল ৬৭ কিলোমিটার ও প্রস্ত ১৮ কিলোমিটার । গভীরতা
আছে ১৪০১ ফুট ।
এই
সাগরকে কেন মৃত সাগর বলা হয় ? প্রায় ৩০ লক্ষ বছর আগে জর্ডন নদী, মৃত সাগর ও গুয়েদি
আবাবা এলাকা বারবার লোহিত সাগরের জলে বন্যার ফলে প্লাবিত হত । এই প্লাবনের ফলে
একটি উপসাগর তৈরি হয় । তারপর ধীরে ধীরে এটি একটি লবণাক্ত হ্রদে পরিণত হয় । তারপর
দেখা যায় যে এই উপসাগরের জলে যেকোনো জিনিস খুব সহজে ভেসে থাকতে পারে । এমন কি ভারী
বস্তুও এর জলে ভেসে থাকতে পারে । তারপর এই সাগরের নাম হয় মৃত সাগর ।
নানা
তথ্য বিশ্লেষণের পর দেখা যায় যে – মহাসাগরের জলের তুলনায় এখানকার জলে মিশে থাকা
খনিজ পদার্থের পার্থক্যের পরিমাণ অনেক । এর জলে রয়েছে প্রচুর নোনা । জলে লবণের
পরিমাণ প্রায় ৩০ ভাগ । এরফলে আপনি সহজে বুঝতে পারছেন যে এখানে কতটা লবণ রয়েছে । লবণ
থাকার ফলে জলের ঘনত্ব হয়েছে অনেক বেশি । তাই যেকোনো বস্তু এই জলে সহজে ডোবেনা,
ভেসে থাকে ।
মৃত
সাগরের জলে মানুষ বসে, শুয়ে আপনার যেভাবে ইচ্ছা আপনি সেভাবে থাকতে পারবেন । এই জলে
প্রচুর পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যার ফলে কোনও প্রাণী এই জলে বসবাস করতে
পারেনা । প্রাণীর জীবনধারণের জন্য অনুপযোগী এই মৃত সাগর । মাছ বা অন্য কোনও প্রাণী এই
জলে নেই । অনেক পর্যটক এখানে ভেসে থাকার আনন্দ নেওয়ার জন্য প্রতি বছর আসেন । তাঁরা
কেউ জলে শুয়ে আছেন আবার কেউ জলের উপর বই পরছেন ।
বিভিন্ন রোগে অসুস্থ মানুষদের বায়ু পরিবর্তনের
স্থান হল এই মৃত সাগর । বর্তমানে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম
কেন্দ্রস্থল । বিশেষ ভাবে যারা চর্ম রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য সবথেকে ভাল হল এখানকার মাটি ।
মনে করা হয় যে – চর্ম রোগে আক্রান্ত লোকেরা এই মাটি ব্যবহার করলে চর্মরোগ ভাল হয়ে
যায় । সোরিয়াসিস, সেলুলাইট, ব্রণ, ফুসকুড়ি, খুশকি দূর করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে । এখানে সূর্যের অতি বেগুনি
রশ্মির প্রভাবও কম । বিভিন্ন ধরণের খনিজ পদার্থের বিপুল উপস্থিতি রোগ নিরাময়ে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । এখানকার খনিজ ও লবণ সুগন্ধি ও প্রসাধনী তৈরীতে
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । এখানে এখন শস্য গবেষণার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে ।
মাছ বা পাখি এখানে না থাকলেও মানুষের জন্য একটি আদর্শ স্থান ।
আমাদের আরও পোস্ট পড়ুন -
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷