শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯

মৃত সাগর কি, মৃত সাগর কোথায় আছে ?.


  আমরা সবাই বিশ্বাস করি মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর স্থান হয় স্বর্গে বা নরকে । কিন্তু মৃত্যুর সাগর সেটা আবার কি ? নামটা নিশ্চয়ই অদ্ভুত ঠেকছে আপনার কাছে জর্ডন ও সিরিয়ার মাঝখানে রয়েছে এই সাগর । প্রকৃতির অনন্য বিস্ময়কর সৃষ্টি এই মৃত সাগর । পৃথিবীর বুকে যে সমস্ত লবণাক্ত সাগর গুলি রয়েছে তাদের মধ্যে সবথেকে লবণাক্ত সাগর হল এটি । সাগর বলা হলেও এটি আসলে একটি হ্রদ । এর দৈর্ঘ্য হল ৬৭ কিলোমিটার ও প্রস্ত ১৮ কিলোমিটার । গভীরতা আছে ১৪০১ ফুট ।


 এই সাগরকে কেন মৃত সাগর বলা হয় ? প্রায় ৩০ লক্ষ বছর আগে জর্ডন নদী, মৃত সাগর ও গুয়েদি আবাবা এলাকা বারবার লোহিত সাগরের জলে বন্যার ফলে প্লাবিত হত । এই প্লাবনের ফলে একটি উপসাগর তৈরি হয় । তারপর ধীরে ধীরে এটি একটি লবণাক্ত হ্রদে পরিণত হয় । তারপর দেখা যায় যে এই উপসাগরের জলে যেকোনো জিনিস খুব সহজে ভেসে থাকতে পারে । এমন কি ভারী বস্তুও এর জলে ভেসে থাকতে পারে । তারপর এই সাগরের নাম হয় মৃত সাগর ।


 নানা তথ্য বিশ্লেষণের পর দেখা যায় যে – মহাসাগরের জলের তুলনায় এখানকার জলে মিশে থাকা খনিজ পদার্থের পার্থক্যের পরিমাণ অনেক । এর জলে রয়েছে প্রচুর নোনা । জলে লবণের পরিমাণ প্রায় ৩০ ভাগ । এরফলে আপনি সহজে বুঝতে পারছেন যে এখানে কতটা লবণ রয়েছে । লবণ থাকার ফলে জলের ঘনত্ব হয়েছে অনেক বেশি । তাই যেকোনো বস্তু এই জলে সহজে ডোবেনা, ভেসে থাকে ।

 মৃত সাগরের জলে মানুষ বসে, শুয়ে আপনার যেভাবে ইচ্ছা আপনি সেভাবে থাকতে পারবেন । এই জলে প্রচুর পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যার ফলে কোনও প্রাণী এই জলে বসবাস করতে পারেনা । প্রাণীর জীবনধারণের জন্য অনুপযোগী এই মৃত সাগর । মাছ বা অন্য কোনও প্রাণী এই জলে নেই । অনেক পর্যটক এখানে ভেসে থাকার আনন্দ নেওয়ার জন্য প্রতি বছর আসেন । তাঁরা কেউ জলে শুয়ে আছেন আবার কেউ জলের উপর বই পরছেন ।


বিভিন্ন রোগে অসুস্থ মানুষদের বায়ু পরিবর্তনের স্থান হল এই মৃত সাগর । বর্তমানে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম কেন্দ্রস্থল । বিশেষ ভাবে যারা চর্ম রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য সবথেকে ভাল হল এখানকার মাটি । মনে করা হয় যে – চর্ম রোগে আক্রান্ত লোকেরা এই মাটি ব্যবহার করলে চর্মরোগ ভাল হয়ে যায় । সোরিয়াসিস, সেলুলাইট, ব্রণ, ফুসকুড়ি, খুশকি দূর করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে । এখানে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবও কম । বিভিন্ন ধরণের খনিজ পদার্থের বিপুল উপস্থিতি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । এখানকার খনিজ ও লবণ সুগন্ধি ও প্রসাধনী তৈরীতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । এখানে এখন শস্য গবেষণার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে । মাছ বা পাখি এখানে না থাকলেও মানুষের জন্য একটি আদর্শ স্থান ।
আমাদের আরও পোস্ট পড়ুন - 


  আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । জানা অজানা বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
   

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷