জীবনে ধনী মানুষ হওয়ার বিভিন্ন উপায় কি কি ?.
আমরা
প্রতিটি মানুষ জীবনে ধনী বা টাকাওয়ালা হতে চাই । আপনি না বলতে পারবেন না যে আপনি ধনী
বা টাকাওয়ালা হতে চান না । কিন্তু আমরা সবাই সেটা হতে পারিনা । আপনি মনে করেন, যারা কোটিপতি তাঁরা কোটিপতি হয়েই জন্মগ্রহণ করেছেন । আপনার এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল । আপনি ধনী নন এর জন্য আপনি নিজে
দায়ী । আমাদের জীবনের কতগুলি খারাপ বা
বদ অভ্যাস আমাদের ধনী হতে দেয়না । আপনি যদি আপনার সেই খারাপ বা বদ অভ্যাস গুলি
ত্যাগ করতে পারেন, নিজের ইচ্ছাশক্তি সংকল্প এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সঠিক, সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে
পারেন তাহলে আমি আশা করি আপনি একদিন সত্যি সত্যি ধনী হয়ে উঠবেন । তাহলে
আসুন এখন জেনে নিন জীবনে ধনী হওয়ার বিভিন্ন উপায় ।
১) নির্দিষ্ট কাজ – সবার আগে আপনাকে একটা নির্দিষ্ট কাজ ঠিক করতে হবে । আপনার সকল মানসিক শক্তি দিয়ে আমার লক্ষ্যকে ফোকাস করুন । একবার আপনি আপনার জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন । যদি আপনি আপনার দৃষ্টি লক্ষ্যের দিকে নির্দিষ্ট করে রাখেন কারো সাধ্য নেই আপনাকে আটকিয়ে রাখবে । কোনও কাজ করার আগে সতর্ক হন এবং বার বার ভাবুন । আপনি তাহলে নিশ্চয়ই পারবেন । এমন একটা কাজ নির্বাচন করুন যার থেকে আপনি ভাল একটা টাকা মাসে মাসে পেতে পারেন । আপনাকে আপনার নিজের কাজ খুঁজে নিতে হবে । সেই কাজ করুন যা আপনার করতে ভাল লাগে । যে কাজের মধ্যে আপনি আপনার প্রতিভা দেখাতে পারবেন ও ভবিষ্যতে আরও উপরের ওঠার রাস্তা থাকে । কারণ দিনে দিনে আপনাকে আপনার আয় আরও বাড়াতে হবে । সবসময় একি টাকায় আমাদের চলেনা । বাইরে কোথায় কি হল সে দিকে মন না দিয়ে নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন ।
২) টাকা জমানো –
ধনী
হওয়ার জন্য হিসেব করে খরচ করা ও টাকা জমানো অবশ্যই প্রয়োজন । আমি
ধরলাম আপনি একটা কাজ শুরু করেছেন, ভাল টাকা আয় হচ্ছে তবুও টাকা আপনার কাছে থাকছেনা
। এর কারণ হল হাতে টাকা রাখলে আপনি সেই টাকা ধরে রাখতে পারবেন না । দামী মোবাইল
কিনে,
উইকএন্ডে
দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়া, মাসে মাসে ঘুরতে যাওয়া এসব করেন । এরফলে আয়ের
থেকে বেশি টাকা ব্যায় করে ফেলছেন । এরফলে আপনার হাত থেকে যেকোনো সময় টাকা বেরিয়ে
যাচ্ছে । এসব করবেন আপনার এক্সট্রা টাকা দিয়ে । তাই আপনাকে একটা নির্দিষ্ট টাকা
প্রতি মাসে জমাতে হবে । আপনি যা আয় করেন যদি তাঁর ২০-৩০ শতাংশ প্রতি মাসে জমাতে
পারেন তাহলে আপনি খুব ভাল কাজ করবেন । ধরলাম, আপনি আপনি মাসে ৫ হাজার টাকা আয় করেন
। সেই টাকার ২০-৩০ শতাংশ হলে প্রতি মাসে হবে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা । মাঝে মাঝে সেই
টাকা আবার নতুন করে ডিপোজিট করবেন । আপনি আপনার টাকা যত বেশি দিন ডিপোজিট করে
রাখবেন ততই বেশি সুদ পাবেন । এখন বলবেন - আমি এত দিন অপেক্ষা করতে পারবোনা । তাহলে
আমি বলবো আপনি জীবনে কোনোদিন কিছু করতে পারবেন না । আপনি কখনোই রাতারাতি কোটিপতি হতে পারবেন না । কারণ,
পৃথিবীতে যত ধনী মানুষ আছে তাঁরা একদিনে কেউ ধনী হননি । বছরের পড় বছর কষ্টের পর
তাঁরা আজ এই অবস্থায় আসতে পেরেছে ।
৩) ব্যবসা – এখন
আপনার হাতে যদি কিছু টাকা থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই কোনও ছোট-বড় একটা ব্যবসা শুরু
করতে হবে । কারণ চাকরিতে আপনার মাইনা নির্দিষ্ট থাকে । আপনি ইচ্ছা করলে তা বাড়াতে
পারবেন না । কিন্তু, যদি আপনি কোনও ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনি আপনার ব্যবসা
বাড়ার সাথে সাথে আপনার আয়ও বাড়বে । আপনি যদি ব্যবসা করে ধনী হতে চান, তবে প্রথমে আপনাকে আপনার
পরিশ্রম আর মনোযোগের ওপরই সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হবে । যেকোনো একটাতে বিনিয়োগ না করে বিভিন্ন যায়গায় টাকা বিনিয়োগ
করুন । যেমন – মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিট । শুধু
একটা কাজ করলে আয় বাড়বেনা, বিভিন্ন কাজের মধ্যে আপনাকে যুক্ত থাকতে হবে । ভারতের
টাটা কোম্পানি তাদের ৯৯ বিভিন্ন ব্যবসা আছে ।
৫) সঠিক পরামর্শ ও
নির্দেশনা - এমন মানুষদের সাথে সম্পর্ক রাখুন যারা আজ ধনী হয়েছেন । এরা আপনাকে
সামনে আগিয়ে যেতে সাহায্য ও উৎসাহ দেবে । আপনি কোনও সমস্যায় পড়লে আপনাকে সঠিক
পরামর্শ ও নির্দেশনা দেবে । তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নিন যে সেই বিষয়ে
অভিজ্ঞয় । অনেক মানুষ আছে যারা মুখে অনেক বড়ো বড়ো কথা বলে কিন্তু, কোনও কাজ করার
ক্ষমতা নেই । তাদের থেকে দূরে থাকুন ।
৬) অযথা ব্যয় – আমাদের সবারই ছোটবেলা থেকে কমবেশি সঞ্চয় করার অভ্যাস
রয়েছে । আপনার টাকা থাকলেও বিনা কারণে অযথা টাকা ব্যায় করবেন না । অতিরিক্ত খরচ ধনী হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শত্রু । পৃথিবীর
অনেক ধনী ব্যাক্তিরা এখনো হিসেব করেই খরচ করেন । দরকারি ছাড়া বিনা দরকারে টাকা ব্যায় করে আপনার নিজের ক্ষতি করবেন না । প্রতিটি
টাকা খরচ করার আগে ভেবে নিন যে, আপনার টাকাটি
যোগ্য স্থানে খরচ করছেন কিনা । যেটুকু শুধু আপনার প্রয়োজন পূরণ করে সেটুকু দিয়ে জীবন যাপন
করতে শিখুন । প্রয়োজনের মধ্যে জীবনযাপন
করতে শিখে গেলে দেখবেন আপনি অনেক খরচই বাঁচাতে পারবেন । যদি আপনি নিজেই নিজেকে
নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন তাহলে টাকা নিয়ন্ত্রণ করবেন কিভাবে । আমরা কি করি, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন, পাড়ার লোকদের দেখানোর জন্য অনেক অদরকারি জিনিস বাড়িতে কিনে আনি । সেই জিনিস কিনুন যেটা আপনার বাড়িতে লাগবে । কোনওকিছু কিনতে না পারাটা কোনও লজ্জার বিষয় নয় । যে জিনিসটা প্রয়োজন, এবং যা আপনি আপনার সাধ্যের
মধ্যে কিনতে পারবেন শুধু সেটাই কিনুন । দামী জিনিস কিনতে চাওয়া
দোষের কিছু নয় । কিন্তু সাধ্যের বাইরে
কেনাটা বোকামী । পাড়ার একটা লোক একটা জিনিস কিনে আনলেন, আপনার দেখে কিনার ইচ্ছা হল । একবার ভাবলেন না যে ঐ জিনিসটা আমার কি সত্যি দরকার আছে ?
৭) ধার দেওয়া –
আমারা সমাজবদ্ধ জীব । সমাজে থাকলে হলে একে অপরকে সাহায্য আমাদের করতেই হয় । তাঁর
মধ্যে সবথেকে বেশি লেনদেন হয় টাকা । আপনার
টাকা যদি কাউকে ধারে বা সুদে দেন, তাঁর আগে ভাল করে লোকটি সম্বন্ধে জেনে নিন । কারণ
বেশির ভাগ সময় আনাদের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হয় হয় এই টাকা ধার দেওয়া নিয়ে । আপনি ধারে
টাকা দিলেন সে সঠিক সময়, মানে আপনার যখন টাকা লাগবে সেই সময় যেন ফেরত দিতে পারে তা
বুঝে শুনে তবে টাকা ধার দেবেন ।
আমাদের আরও পোস্ট পড়ুন -
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । সম্পর্ক বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে সম্পর্ক লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ধন্যবাদ
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷