শতবর্ষ পর পর পৃথিবীতে ফিরে এসেছে কোন কোন মহামারী ?.
প্রতি
শত বছর পর পরই মহামারিতে আক্রান্ত হচ্ছে বিশ্ববাসী । ইতিহাসের এ যেন এক অলিখিত নিয়ম । কোনো সংক্রামক রোগ যখন
বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর মাঝে খুব দ্রুত সংক্রমিত হয়ে পড়ে তখন বলা হয় রোগটিকে মহামারী । এসব মহামারীতে মৃত্যু হয়েছে কোটি কোটি মানুষের । এখন গোটা
বিশ্ব করোনা ভাইরাস মহামারীর আকার ধারণ করেছে । গোটা বিশ্বের মানুষ গৃহ বন্দী, প্রতি ১০০ বছর অন্তর অন্তর বিস্ময়কর ভাবে ফিরে আসছে নানা নামের মহামারী । নানা কারণে একটি ছোট অঞ্চলে প্রাদুর্ভাব ঘটা
রোগ যখন ছড়িয়ে যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, তখন
মহামারী রূপ নেয়, তাকে বলা হয় প্যান্ডেমিক বা বিশ্বমারী । সেরকম কিছু মহামারির
কথা এখন আমি আপনাদের বলবো ।
১৭২০ সালে শুর হয়েছিল প্লেগ অফ মার্সেই । ১৩৪৭
সালে প্রথম বড় বুবোনিক প্লেগ সংক্রমণ ঘটে যেটিকে ব্ল্যাক ডেথ বলে আখ্যায়িত করা হয় । বুবোনিক
প্লেগ ইউরোপে কয়েক শতাব্দীকাল ধরে টিকে ছিল । কিন্তু, ১৭২০ সালে
সর্বশেষ যে বুবোনিক প্লেগের সংক্রমণ ঘটে সেটি বৃহৎ আকারের মহামারী ছিল । পৃথিবী জুড়ে একলক্ষ মানুষের এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর । শুধু
মার্সেইতেই মৃত্যু হয়েছিল ৫০ হাজারের বেশি মানুষের । এই রোগের উৎস ছিল ফ্রান্সের মার্সেই শহর । এই রোগটিকে আরও একটি নাম দেওয়া হয়েছিল ব্ল্যাক ডেথ । ফ্রান্সে
৪৫ বছরের জন্য নাকি কমে গিয়েছিল জন্মহার ।
১৯২০ সালে
স্প্যানিশ ফ্লু হল আরেক বড় রকমের মহামারি । স্পেনে শুরু হওয়া এই রোগ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে । ১৯১৮
সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ১৯২০ অবধি এটি ৫০ কোটি মানুষের মাঝে ছড়িয়েছিল — যা
সেই সময়ে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ । এটিকে
মানব ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক মহামারী হিসাবে উল্লেখ করা হয় । মহামারীর
উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং যার কারণে রোগটির উৎস ভূমি সম্পর্কে মতভেদ
রয়েছে । তবে ফ্রান্সের
এটেপলসে যুক্তরাজ্যের প্রধান সেনা মঞ্চায়ন ও হাসপাতালের শিবিরটি গবেষকরা
তাত্ত্বিকভাবে মনে করেন স্প্যানিশ ফ্লুর কেন্দ্রস্থল । ক্রমাগত
স্প্যানিশ ফ্লু জিনগত ভাবে পরিবর্তন হতো যার ফলে ভাইরাসটি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক
বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছিল । অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্র বিশ্বের মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ে এই ইনফ্লুয়েঞ্জায়, মৃত্যুর
মিছিল বাড়তেই থাকে । কত জন মারা গিয়েছিল সেটির আনুমানিক হিসাবে পরিমাণের
ভিন্নতা রয়েছে । স্প্যানিশ ফ্লু দুই বছর ধরে এই ফ্লু তে মৃত্যু হয় আনুমানিক ১.৭ থেকে ৫ কোটি বা কোন কোন হিসাবে
১০ কোটির মত । এই
রোগে বিশ্বের অনেক জায়গায় মানুষ মারা গিয়েছে । প্রায় ১.২-১.৭ কোটি মানুষ শুধু ভারতে মারা গিয়েছিল । এ
মৃত্যু মিছিলটি ‘দ্য ইনফ্লুয়েঞ্জা প্যানডেমিক’ নামে পরিচিত
। স্প্যানিশ
ফ্লু মহামারীতে মৃত্যুর হার তরুণ-যুবকদের মধ্যেই বেশি ছিল । ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষেরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ।
এরপর
2020 সালে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড ১৯ । যার উৎস চীনের উহান থেকে । চীন থেকে হওয়া এই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসটি
ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে । দুনিয়া জুড়ে
মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা, মারণ
করোনা ভাইরাস, যার জেরে এখনও পর্যন্ত (২৭/০৪/২০২০) ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু
হয়েছে । এর
ভয়াল থাবা দেখতে শুরু করেছে পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো । করোনা ভাইরাস
ছড়িয়ে পড়া রোধে দেশজুড়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার । বন্ধ
রয়েছে স্কুল, কলেজ । স্থগিত করা হয়েছে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ।
খেলাধুলার অনুষ্ঠান বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে । জনসমাগম
স্থল এখন পুরো ফাঁকা । ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় ওপরের সারিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে হল - ইরান, দক্ষিণ
কোরিয়া, স্পেন, জার্মানি,
ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নাম উল্লেখ করা যায় ।
হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি ১০০
বছর অন্তর এমন মহামারী ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়ায় । দেখে মনে হয়
ইতিহাস যেন প্রতি ১০০ বছর পরে নিজেকে পুনরাবৃত্তি করছে । প্রতি ১০০ বছরে এমন মহামারী কেন হয় তার বৈজ্ঞানিক
কোন কারণ খুঁজে
পাওয়া যায় না । এ যেন এক অলিখিত
নিয়ম ।
আমাদের
লেখা আপনার কেমন লাগছে বা আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান ।
আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্ট টি পৌঁছেদিতে অনুগ্রহ করে শেয়ার করুণ । জানা অজানা ও
সময় বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে জানা অজানা ও সময় লেখাটির উপর ক্লিক করুণ । পুরো
পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । আপনার ইমেল দিয়ে আমাদের ওয়েবসাইট টি
সাবস্ক্রাইব করুন ।
আমাদের আরও পোস্ট -
আমাদের আরও পোস্ট -
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।