মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯

ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায় কি কি ?.


  আমাদের শরীরে আঘাত লাগা, অন্য কোন অসুখের আক্রমণ, সংক্রমণ, স্ফীতের কারণে বা অন্য কোন কারণে দেহের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়াকে জ্বর বলা হয় । সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের শরীরের তাপমাত্রা সাধারণত হয় ফারেনহাইট স্কেলে ৯৮.৪ ডিগ্রি । যখন সেই তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর বেশি বৃদ্ধি পায় তখন আমাদের বুঝতে হবে শরীরে জ্বর হয়েছে । গায়ে হাত দিয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে কিনা অনুমান করা যায় । সঠিকভাবে তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা দরকার । থার্মোমিটার বগলে বা জিভের নিচে দিয়ে তাপমাত্রা মাপা হয় । জ্বর হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে ।



  জ্বরের লক্ষণ – সাধারণভাবে চারপাশের আবহাওয়া বদলের ফলে জ্বর হতে দেখা যায় । মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, শরীরে আঘাত লাগা, জীবাণু বা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে, ম্যালেরিয়া, নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস, কালাজ্বর, টাইফয়েড ইত্যাদির কারণেও জ্বর হতে পারে । আবার বিভিন্ন রোগের ফলে যেমন – ডিপথেরিয়া, জলবসন্ত, হাম, টনসিলের প্রদাহ ইত্যাদি । জ্বর হলে আমাদের খিদে কমে যায়, মাথাঘোরা, বমিভাব, ত্বক গরম হয় ও শুকনো হয়ে যায় । চোখ, মুখ লাল হয়ে যায় । হাতে ও পায়ে ব্যথা তৈরি হয় । অনেক মানুষ আবার জ্বরের জন্য ভুল বকে থাকেন ।


 
প্রতিকারের উপায়
– জ্বর কোনও নির্দিষ্ট রোগ নয়, অন্য রোগের ফলে আমাদের শরীরে জ্বর হয় । ঘরোয়া পদ্ধতি যেগুলি করতে পারেন – ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে কোন ওষুধ খাবেন না । প্রথমে রোগীর মাথায় ঠাণ্ডা জলের কাপড়ের পট্টি দিতে হবে । যদি পারেন মাথায় বরফের ব্যাগ দিতে পারেন । ভিজে কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হবে । হালকা পাতলা জামা কাপড় পরাতে হবে । রোগী যে ঘরে থাকবে সেই ঘর পরিষ্কার, আলো বাতাস যুক্ত হতে হবে । ঘরের দরজা, জানলা খুলে আলো ও বাতাস আসার ব্যবস্থা করে দিন । শিশুদের জ্বর হলে তাঁদের ঢাকা দেওয়া জামা কাপড় পরাবেন না । হালকা পাতলা জামা কাপড় পরাতে হবে । মাথায় হাওয়া দিতে হবে ।

১) ম্যালেরিয়া – প্লাজমোডিয়াম নামের এককোষী আদ্য প্রাণীর জন্য আমাদের ম্যালেরিয়া জ্বর হয় । ম্যালেরিয়া পরজীবীর জীবনচক্রে পোষক দুটি প্রাণীর নাম হল – স্ত্রী মশা ও মানুষ । স্ত্রী মশারা জীবাণু বহন করে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে দেয় । ম্যালেরিয়ার লক্ষণ হল – রক্তশূন্যতা, যকৃৎ বড়ো হয়ে যাওয়া, প্লীহাবৃদ্ধি ইত্যাদি । মাথাঘোরা, বমিভাব, হাত, গায়ে ব্যথা । ম্যালেরিয়া হলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যান ।


প্রতিকারের উপায় – সবার প্রথমে মশার বংশ বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে । আশেপাশে জল জমতে দেবেন না । মশারি ব্যবহার করতে হবে । মশা মারার জন্য ধুপ বা কয়েল ব্যবহার করুন । মশা আপনাকে কামড়াতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন । শরীরে ক্রিম বা তেল মাখুন । মশার লার্ভা ধ্বংস করুন । রোগীকে আলাদা ঘরে থাকার ব্যবস্থা করুন । সব সময় পরিষ্কার পরিছন্ন থাকবেন । উপরে দেওয়া উপায় গুলি পালন করুন ।

২) ডেঙ্গু – ভারত ও বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ার পর ডেঙ্গু হল সর্বাধিক মশা বাহিত রোগ । স্ত্রী এডিস মশা ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান বাহক । এই মশা দিনের বেলা, সকালের দিকে মানুষকে কামড়ায় । বাড়ির আশেপাশে যেমন – ডাবের খোলা, ফুলদানি, বোতল, বাতানুকূল যন্ত্র ইত্যাদিতে এরা জন্মায় । প্রচুর পরিমাণে জ্বর শরীরে হয়, হাড়ে ব্যথা হয় । আপনার মনে হবে যেন হাড় ভেঙ্গে গেছে । মাথা যন্ত্রণা, নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়া, মলের রঙ কালো হয়ে যায় । দেহের রক্তচাপ ও তাপমাত্রা কমে যায়, লিভার বেড়ে যায়, হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায় ।

প্রতিকারের উপায় – বাড়ির আশেপাশে জল জমতে দেবেন না । জমা জলে এই মশা ডিম পারে । জলে কেরোসিন, রাসায়নিক স্প্রে দিন । ফুলদানি, টব, রেফ্রিজারেটরের জল নিয়মিত বদলাতে হবে । প্রতিদিন নিয়মিত দিনে ও রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমবেন । জ্বর হলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করান । রোগীর যদি রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে । মশার হাত থেকে সব সময় নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন ।
   আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । স্বাস্থ্য বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে স্বাস্থ্য লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 

আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।


1 টি মন্তব্য:

ধন্যবাদ

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷