প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের গুরুত্ব কি ?.
সাহিত্যিক উপাদান ছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিক
উপাদানের সাহায্যে প্রাচীন ভারতের কথা জানা যায় । প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির
মধ্যে লেখ গুলির স্থান সবার প্রথমে । সাহিত্যে
পরিবর্তন ঘটে কিন্তু, লেখগুলি অপরিবর্তিত থেকে যায় । লেখার জন্য বিভিন্ন দ্রব্য
যেমন- সোনা, তামা, লোহা, রুপা, ব্রোঞ্জ, পাথর ইত্যাদি ব্যবহার করা হত । সেগুলিতে
বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা যেমন – সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, তেলেগু, তামিল, মালায়ালাম
ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছিল । বেশির ভাগ লেখতে ব্রাহ্মী বা খরোষ্ঠী লিপি ব্যবহার
করা হয়েছে ।
মুদ্রা হল এক ধরনের ঐতিহাসিক উপাদান । প্রাচীন ভারতের ইতিহাস জানার জন্য মুদ্রা গুরুত্বপূর্ণ । সাহিত্য থেকে আমরা যে তথ্য পাই মুদ্রার দ্বারা তার সত্যতা যাচাই করা যায় । তারিখ যুক্ত মুদ্রা থেকে কাল পরম্পরা নির্মাণে ও তারিখ বিহীন মুদ্রা মুদ্রা থেকে রাজার নাম পাওয়া যায় । স্বর্ণমুদ্রা সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধির পরিচয় বহন করে আর, হীন মানের মুদ্রা সাম্রাজ্যের সঙ্কটের পরিচয় দেয় । মুদ্রার দেবদেবীর মূর্তি থেকে রাজার ধর্মের কথা জানা যায় । মুদ্রার সাহায্যে প্রায় ত্রিশ জন ব্যাকট্রীয় গ্রিক শাসকের কথা জানা যায় কিন্তু, অন্য তথ্য থেকে ৫-৬ জনের বেশি জানা যায় না । শক- কুষানদের ইতিহাস জানতে মুদ্রার গুরুত্ব অনেক বেশি । গুপ্তদের মুদ্রার মধ্যে বিশেষ করে সমুদ্র গুপ্তের মুদ্রাগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য । বাংলায় সমতট-হরিকেল অঞ্চলে গুপ্ত পরবর্তী ও ইসলাম পূর্ববর্তী মুদ্রা পাওয়া গেছে ।
প্রাচীন বাংলার ভৌগলিক অবস্থান কেমন ছিল ?.
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর গুলি কি কি ?.
হরপ্পা সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন দিক কেমন ছিল ?
লেখ গুলিকে এবার দুভাগে ভাগ করা হয়
– দেশি ও বিদেশি । দেশি লেখ গুলির মধ্যে মৌর্য সম্রাট অশোকের লেখগুলি শ্রেষ্ঠ ।
শিলাখন্ডে প্রাপ্ত লেখগুলিকে শিলালেখ, স্তম্ভগাত্রে পাওয়া লেখকে স্তম্ভগাত্রে আর
গিরি গুহায় পাওয়া লেখকে গুহা লেখ বলা হয় । অশোক তাঁর লেখগুলিতে ব্রাহ্মী লিপির
ব্যবহার করেছেন কিন্তু, উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে খরোষ্ঠী লিপি ব্যবহার দেখা যায় । এই
লিপি গুলি থেকে অশোকের রাজ্য জয়, ধর্ম বিজয় নীতি, বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে
জানা যায় । ১৮৩৭ সালে জেমস প্রিন্সেপ অশোকের লেখ পাঠোদ্ধার করেন ।
অশোকের পরবর্তী কালে লেখকে সরকারি ও বেসরকারি এই
দুই ভাগ করা হয় । সরকারি লেখ গুলি আবার প্রশস্তি ও ভূমি দান এই দুই বিষয়ে । প্রশস্তি
গুলির মধ্যে হরিসেনের এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে ভারতের রাজনৈতিক চিত্র ও সমুদ্র
গুপ্তের বিবরণ পাওয়া যায় । গৌতমীপুত্র সাত কর্নির নাসিক প্রশস্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান । এটি থেকে তাঁর রাজ্য জয়, সমাজ সংস্কারের কথা জানা যায় । এছাড়াও রুদ্র
দামনের জুনাগড় শিলালেখ, গোয়ালিয়র প্রশস্তি থেকে রাজা ভোজ, আইহোল প্রশস্তি থেকে
দ্বিতীয় পুলকেশীর কথা জানা যায় । উমাপতি ধর রচিত দেওপাড়া প্রশস্তি থেকে সেন রাজা
বিজয় সেন, হাতিগুম্ফ লেখ থেকে কলিঙ্গরাজ খারবেলের কথা জানা যায় ।
বিদেশি লেখ গুলির মধ্যে এশিয়া মাইনরে আনাতোলিয়ায়
প্রাপ্ত লেখ গুরুত্বপূর্ণ । এখানে আর্য রাজাদের সন্ধির উল্লেখ আছে । পারস্য সম্রাট প্রথম
দারয়-বৌষ পারসেপোলিস ও নকস-ই-রুস্তম লেখ দুটি গুরুত্বপূর্ণ । দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়
কম্বোডিয়া, যবদ্বীপ, বোর্ণিয়, আন্নাম, চম্পার পূর্ব উপকূলে লেখ পাওয়া গেছে । ভারত,
ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোচিনের ইতিহাসে এগুলির গুরুত্ব অপরিসীম ।
মুদ্রা হল এক ধরনের ঐতিহাসিক উপাদান । প্রাচীন ভারতের ইতিহাস জানার জন্য মুদ্রা গুরুত্বপূর্ণ । সাহিত্য থেকে আমরা যে তথ্য পাই মুদ্রার দ্বারা তার সত্যতা যাচাই করা যায় । তারিখ যুক্ত মুদ্রা থেকে কাল পরম্পরা নির্মাণে ও তারিখ বিহীন মুদ্রা মুদ্রা থেকে রাজার নাম পাওয়া যায় । স্বর্ণমুদ্রা সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধির পরিচয় বহন করে আর, হীন মানের মুদ্রা সাম্রাজ্যের সঙ্কটের পরিচয় দেয় । মুদ্রার দেবদেবীর মূর্তি থেকে রাজার ধর্মের কথা জানা যায় । মুদ্রার সাহায্যে প্রায় ত্রিশ জন ব্যাকট্রীয় গ্রিক শাসকের কথা জানা যায় কিন্তু, অন্য তথ্য থেকে ৫-৬ জনের বেশি জানা যায় না । শক- কুষানদের ইতিহাস জানতে মুদ্রার গুরুত্ব অনেক বেশি । গুপ্তদের মুদ্রার মধ্যে বিশেষ করে সমুদ্র গুপ্তের মুদ্রাগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য । বাংলায় সমতট-হরিকেল অঞ্চলে গুপ্ত পরবর্তী ও ইসলাম পূর্ববর্তী মুদ্রা পাওয়া গেছে ।
খননকার্যের ফলে মাটির নীচ থেকে যে সব মন্দির,
মূর্তি, পোড়া মাটির কাজ পাওয়া যায় সেগুলিকে বলা হয় স্থাপত্য-ভাস্কর্য প্রত্নতত্ত্ব
। এগুলি আবার তিন ভাগে বিভক্ত – স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলা । দেবদেবীর মূর্তি,
পশুর মূর্তি ও মানুষের মূর্তি ইত্যাদিকে ভাস্কর্য বলা হয় । ভাস্কর্য গুলি প্রধানত
প্রাসাদ, মন্দিরের দেওয়ালে খোদাই করা হত । পাথর, ধাতু ও পোড়া মাটিতে এগুলি খোদাই
করা হত । অজন্তায় ও ভীমবেটকায় গুহার দেওয়ালের ছবি গুলি আজও আমরা দেখতে পাই ।
প্রাচীন কালের সমাজ ও জীবন বোঝার জন্য এগুলির খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে । ছবি
গুলিতে শাসক ও সাধারণ মানুষের জীবনের নানা দিক দেখতা পাওয়া যায় ।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে
তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে
শেয়ার করুন । ইতিহাস বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে নিচে
ইতিহাস লেখাটির উপর ক্লিক করুন । পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক
ধন্যবাদ ।
আমাদের আরও পোস্ট পড়ুন -
গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্মের অজানা কাহিনী কি ?.প্রাচীন বাংলার ভৌগলিক অবস্থান কেমন ছিল ?.
আধুনিক ভারতের ইতিহাসের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর গুলি কি কি ?.
হরপ্পা সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন দিক কেমন ছিল ?
আপনারা দয়া করে এখানে থাকা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জিনিস কিনুন, তাহলে আমি কিছু কমিশন পাব।